সীতামঢ়ীতে পুলিশের টহল। ছবি সৌজন্য টুইটার।
ভারতের এলাকায় ঢুকেই নেপাল সশস্ত্র পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল গ্রামবাসীকে! গুলি চালিয়ে ভারতীয় কৃষককে খুন করেছিল। বিহারের সীতামঢ়ী সীমান্তে শুক্রবারের ঘটনা সম্পর্কে এমনই অভিযোগ ‘ধৃত’ ব্যক্তি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের।
ঘটনার তিনদিন পরেও আতঙ্কে সীমান্তবর্তী জানকীনগরের বাসিন্দা নীতীশ কুমার। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় এক ঘন্টা ধরে দফায় দফায় গুলি চলেছিল। ১০-১২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে নেপালের বাহিনী।’’ আরেক গ্রামবাসী অজিত কুমারের কথায়, ‘‘নেপাল পুলিশকে আগে কখনও এমন আচরণ করতে দেখিনি।’’ তিনি জানান, কাঁটাতারবিহীন লালবন্দি-জানকীনগর সীমান্তে কখনওই কোনও কড়াকড়ি ছিল না। পাসপোর্ট-ভিসার কোনও ঝঞ্ঝাট না-থাকায় দু’দেশের নাগরিকরা অবাধে আসাযাওয়া করেন। নেপালের মদেশীয় মহল্লাগুলিতে তাঁদের অনেকেরই আত্মীয়-পরিজন রয়েছেন।’’ বস্তুত, ঘটনার দিনও আক্রান্ত স্থানীয় বাসিন্দা লগনকিশোর তাঁর ছেলে ও পরিবারকে নিয়ে সীমান্ত লাগোয়া নেপালের গ্রামে পুত্রবধূর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সীমান্ত পেরনোর সময় তাঁকে আটকায় নেপাল পুলিশ।
লগন জানিয়েছেন, তর্কাতর্কি শুরু হলে হঠাৎই তাঁকে রাইফেলের বাট দিয়ে মারতে মারতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন নেপাল সশস্ত্র পুলিশ। লগনের ছেলেকেও মারধর করা হয়। সে সময় কয়েকজন ভারতীয় কৃষক জমিতে কাজ করছিলেন। তাঁরা ঘটনা দেখে এগিয়ে এলে নেপালি বাহিনী গুলি ছুড়তে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই নিহত হন বিকাশ যাদব। উমেশ রাম, উদয় ঠাকুর-সহ তিন কৃষক জখম হন। লগন বলেন, ‘‘গুলি চলার সময় আমি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলাম। সে সময় আমাকে আমাকে ভারতের এলাকায় ঢুকে ফের আটক করে নেপাল পুলিশ। সংগ্রামপুর চৌকিতে নিয়ে গিয়ে আমাকে মারধর করা হয়। জোর করে জবানবন্দি আদায় করে যে, আমি নেপালে ঢুকেছিলাম।’ শনিবার সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে লগনকে সশস্ত্র সীমা বলের হাতে তুলে দেয় নেপাল পুলিশ। ভারতীয় জওয়ানদের জানানো হয়, অস্ত্র ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্বাসরোধেই মৃত্যু সুশান্তের, বলছে পোস্ট মর্টেম, হবে ভিসেরা টেস্টও
আরও পড়ুন: এ বার চালু হতে পারে লোকাল ট্রেন, যাত্রী সুরক্ষায় থাকবে বিধি-নিষেধ
লগনের ছেলে জানান, ওই নেপালি জওয়ানেরা সম্ভবত পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা। কারণ তাঁদের ভাষা তিনি বুঝতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা এবং আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার শ্যালক এসেছিলেন। উনি নেপালের নাগরিক। কিন্তু ওর কথাও শোনেনি নেপাল পুলিশ।’’
অজিতের কথায়, ‘‘আমরা তো বরাবরই নেপাল পুলিশের সামনে দিয়ে যাতায়াত করি। এই এলাকায় অন্তত ৮০ শতাংশ পরিবারেরই নেপালের গ্রামগুলিতে বৈবাহিক সম্পর্ক রয়েছে।’’ মানচিত্র নিয়ে দু’দেশের একটা ‘গোলমাল’-এর খবর কানে এসেছে গ্রামবাসীদের অনেকেরই। আর কালাপানি-লিপুলেখ বিতর্কের মধ্যেই এখন ‘কারণ’ খুঁজছেন তাঁরা।