পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সেনার আধুনিক তাঁবু। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ নয়। শীতের লাদাখে সবচেয়ে বড় শত্রু প্রকৃতি। প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবিলা করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কৌশলগত অবস্থানগুলি দখলে রাখতে তাই নানা অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতীয় সেনা। সামরিক যানের জ্বালানির জন্য পাতালে তেলের ট্যাঙ্ক, আমেরিকা থেকে আনা শীতের পোশাকের বন্দোবস্তের পাশাপাশি নয়া পরিকাঠামো তালিকায় রয়েছে নানা স্বাচ্ছন্দ্যের বন্দোবস্ত যুক্ত তাঁবু।
বিশেষ পলিমার ফাইবারের তৈরি এই তাঁবুগুলিতে রয়েছে গরম জলের পাইপ এবং জেনারেটরে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা। হিমাঙ্কের ৩০-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত সেনাদের জন্য রুম হিটারেরও ব্যবস্থা রয়েছে এই স্মার্ট তাঁবুগুলিতে। দক্ষিণ মেরুতে ভারতীয় অভিযাত্রী দলের সদস্যেরা এ জাতীয় আধুনিক তাঁবু ব্যবহার করে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
ওই সূত্রের খবর, চিনের সঙ্গে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চললেও বরফ ঢাকা শীতের লাদাখে ‘ডিসএনগেজমেন্ট’ (মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো) এবং ‘ডিএসক্যালেশন’ (সেনা সংখ্যা কমানো) প্রক্রিয়ার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি যে সম্ভব নয়, তা বোঝা গিয়েছিল আগেই। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকেই তাই লেহ্-দাবরুক-শিয়োক-দৌলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) বায়ুসেনা ঘাঁটি পর্যন্ত বিস্তৃত নয়া সড়কপথে দুর্গম সেনা চৌকিগুলিতে রসদ, জ্বালানি ও সামরিক সরঞ্জাম পৌছনোর কাজে শুরু হয়েছিল।
প্রায় ৮,০০০ ট্রাকের পাশাপাশি রসদ ও সরঞ্জাম পরিবহণে সাহায্য নেওয়া হয় ভারতীয় বায়ুসেনার ‘সি-১৩০জে হারকিউলিস’ এবং ‘আইএল-৭৬’ পরিবহণ বিমানের। ফরওয়ার্ড পোস্টগুলিতে পাঠানো হয় ‘চিনুক’ এবং ‘এমআই-২৬’ পরিবহণ হেলিকপ্টার। এলএসি বরাবর বিভিন্ন স্থানে নজরদারির জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘মোবাইল এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল ইউনিট’। মনিটর-যুক্ত এই ব্যবস্থা সিয়াচেনেও ব্যবহার করে ভারতীয় সেনা।
আরও পড়ুন: মেলেনি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, বড়দিনের আগেই বাজারে টিকা, জানাল ফাইজার-সহযোগী
২০১৬ সালের ১ অগস্ট সই হওয়া ভারত-আমেরিকা ‘লজিস্টিক এক্সচেঞ্জ মেমোরেন্ডাম এগ্রিমেন্ট’ অনুযায়ী সে দেশ থেকে শীতের উপযোগী পোশাক ও সরঞ্জাম আমদানি করা হয়েছে। নভেম্বরের গোড়ায় লাদাখ তাই পুরু বরফের চাদরে ঢেকে গেলেও কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারছেন সেনারা।
আরও পড়ুন: সুজাপুরে প্লাস্টিক কারখানায় বিস্ফোরণ, মৃত ৪ শ্রমিক