ফাইল চিত্র।
প্রথমত ভাড়া, দ্বিতীয়ত স্বাচ্ছন্দ্যের নিরিখে বাতানুকূল টু-টিয়ার এবং বাতানুকূল থ্রি-টিয়ার কামরার মধ্যে গুণগত ব্যবধান অনেকটাই। এই অবস্থায় কোচ-পিছু আসন এবং স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে থ্রি-টিয়ার এসি কোচের নকশা বদলানো হচ্ছে।
রেলকর্তাদের বক্তব্য, নতুন ধরনের বাতানুকূল থ্রি-টিয়ার কোচে ৭২টির বদলে ৮৩টি বার্থ থাকলেও যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের দিক থেকে তা হবে টু-টিয়ার এসি-র সমতুল। পঞ্জাবের কপূরথালার রেল কোচ কারখানায় ওই কোচের মহড়া সফল ও সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন রেল বোর্ডের ছাড়পত্র পেলেই খুব তাড়াতাড়ি দূরপাল্লার মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনে ওই নতুন কোচের ব্যবহার শুরু হতে পারে।
রেল সূত্রের খবর, শুধু বাড়তি ভাড়ার জন্য অনেকেই থ্রি-টিয়ারে সফর করতে বাধ্য হন। পাশাপাশি দূরপাল্লার ট্রেনে এসি টু-টিয়ার কামরার সংখ্যা থ্রি-টিয়ারের তুলনায় অনেক কম। ওই সব কামরায় আসন-সংখ্যাও থ্রি-টিয়ারের তুলনায় কম। ফলে টিকিট কেটেও এসি টু-টিয়ারে যাত্রীরা প্রায়শই সংরক্ষিত আসন পেতে সমস্যায় পড়েন। রেলকর্তারা জানাচ্ছেন, বাতানুকূল শ্রেণিতে আরও বেশি সংখ্যক যাত্রীকে যাতায়াতের সুযোগ দিতেই এসি থ্রি-টিয়ারের নকশা পাল্টে সেখানে আসন-সংখ্যা এবং স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছিল রেল। বছর দেড়েকের চেষ্টায় কপূরথালার কোচ কারখানায় নতুন থ্রি-টিয়ার এসি কোচের নকশা উদ্ভাবনের পাশাপাশি সফল ভাবে তার মহড়াও সম্পূর্ণ।
রেলকর্তাদের ব্যাখ্যা, এত দিন, থ্রি-টিয়ার এসি কামরায় বিদ্যুৎ সংযোগের প্যানেল বসাতে অনেকটা জায়গা লাগত। নতুন ধরনের এসি কোচে ওই প্যানেলকে কামরার নীচে সরানো হয়েছে। এতেই বাড়তি আরও ১১টি বার্থ বসানোর মতো পরিসর পাওয়া গিয়েছে। স্বাচ্ছন্দ্যের দিক থেকে এসি টু-টিয়ারের সঙ্গে থ্রি-টিয়ারের ফারাক কমাতে সব বার্থকে মডিউলার করা হয়েছে। পরিসর বাড়ানো হয়েছে মাঝখানের বার্থ এবং উপরের বার্থের মধ্যে। সব বার্থে এসি-র ভেন্ট বা ছিদ্র রাখার ব্যবস্থা তো থাকছেই। সব বার্থে বিমানের ধাঁচে বই পড়ার বিশেষ ল্যাম্পেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেলকর্তারা জানান, জলের বোতল রাখার জায়গা, স্ন্যাক্স টেবিল-সহ আরও বেশ কিছু ব্যবস্থা এমন ভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে, যাতে তা প্রয়োজন অনুযায়ী খোলা এবং বন্ধ করা যায়। এর ফলে স্থান সঙ্কুলান করতে অনেক সুবিধে হয়েছে। উপরের বার্থে ওঠার সিঁড়ির নকশাও সম্পূর্ণ বদলে তা স্টিলের করা হয়েছে। এর ফলে যাত্রীদের পক্ষে উপরের বার্থ ব্যবহার করা অনেক সহজ হবে। প্রতিবন্ধী যাত্রীরা যাতে হুইলচেয়ার ব্যবহার করে শৌচালয়ে যেতে পারেন, তার ব্যবস্থাও থাকছে।
‘‘টু-টিয়ারের সঙ্গে থ্রি-টিয়ারের ফারাক অনেকটাই কমিয়ে দেবে নতুন নকশার এই কোচ। থ্রি-টিয়ারের ভাড়ায় মিলবে টু-টিয়ার কামরায় ভ্রমণের আরাম। সেই জন্যই একে ইকনমি ক্লাস বলা হচ্ছে,’’ বলেন রেলের এক আধিকারিক।