বর্তমানে রেলকে প্রতি টিকিটে সব থেকে বেশি ভর্তুকি দিতে হয় ‘স্লিপার’ শ্রেণিতে। ফাইল চিত্র।
নামে ‘ইকনমি থ্রি এসি’ কামরা। কিন্তু এ বার থেকে তাতেও গুনতে হবে সাধারণ ‘থ্রি এসি’ কামরার সমান ভাড়া।
সাধারণ তৃতীয় শ্রেণির বাতানুকূল কোচের একটি শয্যার তুলনায় আড়েবহরে ছোট ইকনমি তৃতীয় শ্রেণির বাতানুকূল শয্যা। হাত-পা ছড়িয়ে বসার জায়গাও কম। তা ছাড়া একটি আধুনিক ‘থ্রি এসি’ (এলএইচবি) কামরায় যেখানে ৭২ জনের শয্যা থাকে, সেখানে ‘ইকনমি থ্রি এসি’ কামরায় শয্যা সংখ্যা ৮৩। দেওয়া হত না কম্বল-বালিশ। তাই সাধারণ ‘থ্রি এসি’ কামরার চেয়ে ‘ইকনমি থ্রি এসি’ কামরায় ভাড়া ছিল প্রায় ৮% কম।
বর্তমানে রেলকে প্রতি টিকিটে সব থেকে বেশি ভর্তুকি দিতে হয় ‘স্লিপার’ শ্রেণিতে। তাই রেলের লক্ষ্য ছিল, ‘স্লিপার’ শ্রেণি কমিয়ে প্রতিটি ট্রেনে কম দামে ‘ইকনমি থ্রি এসি’ কামরা জোড়া। যাতে ‘স্লিপার’ শ্রেণির যাত্রীদের আকৃষ্ট করে যাত্রী পরিবহণে ক্ষতি কমানো সম্ভব হয়। কিন্তু সম্প্রতি একটি নির্দেশিকায় রেল জানিয়েছে, আগামী দিনে ‘ইকনমি থ্রি এসি’ কামরাতেও যাত্রীদের কম্বল-বালিশ দেওয়া হবে। তাই ওই ‘ইকনমি থ্রি এসি’ কামরার ভাড়া বাড়িয়ে তা সাধারণ ‘থ্রি এসি’ কামরার সমান রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ইকনমি ক্লাসে যে শয্যাগুলি রয়েছে, সেগুলি আকারে ছোট, গা-ঘেঁষাঘেষি করে বসতে বাধ্য হন যাত্রীরা। তা হলে কেন ওই কামরার জন্য সাধারণ ‘থ্রি এসি’র সমান ভাড়া গুনবেন যাত্রী?
রেলের যুক্তি, ইকনমি কামরায় প্রতিটি যাত্রীকে বেডিং (কম্বল, চাদর, বালিশ) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে জন্য যাত্রী-পিছু টিকিটে অতিরিক্ত ৬০-৭০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া এতদিন ইকনমি কামরাগুলিতে যাত্রীদের বেডিং রাখার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। এ বার রেল ঠিক করেছে, কামরার শেষ তিনটি ‘বার্থে’ (৮১, ৮২ ও ৮৩) বেডিং রাখা হবে। ফলে ওই আসনগুলিতে থেকে আয় শূন্য হয়ে পড়বে। কামরা-পিছু তিনটি ‘বার্থে’র দাম ওঠানো ও বেডিংয়ের জন্য আলাদা দাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত— এই দু’বিষয়কে মাথায় রেখে ইকনমি শ্রেণির ভাড়া সাধারণ ‘থ্রি এসি’র ভাড়ার সমান রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশে বর্তমানে ‘থ্রি এসি’ কামরা ১১,২৭৭টি। ‘ইকনমি থ্রি এসি’ কামরার সংখ্যা ৪৬৩। যা মোট সাধারণ ‘থ্রি এসি’ কামরার ৪.১%। ফলে খুব কম সংখ্যক যাত্রীকে বাড়তি অর্থ গুনতে হবে বলে রেলের দাবি।