বড়দিনেই যাত্রা শুরু করল ‘হিমদর্শন’ এক্সপ্রেস। ছবি রেলের টুইট থেকে।
বাইরে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি। দুধসাদা বরফ আর তাতে ঠিকরে পড়া রোদের মধ্য দিয়ে ছুটে চলেছে কাচ দিয়ে মোড়া বাতানুকূল টয়ট্রেন। শুধু জানলা নয়, স্বচ্ছ কাচের ছাদ দিয়েও দেখা যাচ্ছে বরফে মোড়া পাহাড়।
পর্যটকদের কথা ভেবেই স্বচ্ছ কাচের ভিস্তা ডোম কামরা প্রথম চালু হয়েছিল কালকা-শিমলা রুটের টয়ট্রেনে। ধাপে ধাপে তা ভারতের অন্য বেশ কিছু রুটের টয়ট্রেনেও চালু হয়েছে। এ বার কালকা-শিমলা রুটে পুরোদস্তুর ছ’টি ভিস্তা ডোম কোচ নিয়ে ছুটছে টয়ট্রেন ‘হিমদর্শন এক্সপ্রেস’। আপাতত ঠিক হয়েছে, বুধবার, বড়দিন থেকে আগামী বছরের ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই ট্রেন চলবে। প্রতিটি ভিস্তা ডোম কোচে ১৪টি আসন রয়েছে। ছ’টি ভিস্তা ডোম কোচ ছাড়াও একটি প্রথম শ্রেণির কোচ থাকছে ওই ট্রেনে। সব কামরারই প্রতিটি আসনকে ইচ্ছামতো ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ঘোরানো যায়।
উত্তর রেলের ব্যবস্থাপনায় রোজ সকাল ৭টা নাগাদ কালকা থেকে ছেড়ে বেলা ১২টা ৫৫ মিনিট নাগাদ ওই বিশেষ ট্রেনের শিমলায় পৌঁছনোর কথা। ফিরতি পথে বেলা ৩টে ৫০ মিনিটে শিমলা থেকে ছেড়ে রাত ৯টা ১৫ মিনিটে সে পৌঁছবে কালকায়। প্রায় ৯৬.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ কালকা-শিমলা যাত্রাপথে ১০২টি সুড়ঙ্গ এবং ৮৮৯টি সেতু রয়েছে। এ ছাড়াও আছে ৯০০টিরও বেশি বাঁক। দু’পাশে বরফ ঢাকা পাহাড় আর অজস্র সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে ওই ট্রেনের যাত্রাপথ বহু বছর ধরেই ‘হেরিটেজ’-এর মর্যাদাপ্রাপ্ত।
ইদানীং শিমলা যাতায়াতের ক্ষেত্রে পর্যটকদের মধ্যে গাড়ি ব্যবহারের ঝোঁক বেড়েছে। রেলপথের তুলনায় সড়কপথে এক ঘণ্টা সময় কম লাগে। পাঁচ ঘণ্টার দূরত্ব চার ঘণ্টায় অতিক্রম করা যায়। পর্যটক টানতে তাই কিছু অভিনব ব্যবস্থা করছে রেল। এর আগে চালু করা হয়েছিল ‘হিপহপ সার্ভিস’। সারা দিনের সিজ়ন টিকিটে ওই রুটের যে-কোনও ট্রেনে যত বার ইচ্ছা ওঠানামা করা যেত। রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘শীতের মরসুমে অনেক পর্যটকই শৈল শহরে আসেন। সেই সব পর্যটককে রেলযাত্রায় আগ্রহী করে তুলতেই এই বন্দোবস্ত।’’