—প্রতীকী ছবি।
আর্থিক ক্ষতির দোহাই দিয়ে প্রবীণ যাত্রীদের টিকিটে ছাড় ফেরাতে নারাজ রেল। অথচ সারা দেশে বিভিন্ন স্টেশনে প্রধানমন্ত্রীর ছবি-সমন্বিত ‘থ্রি-ডি সেলফি বুথ’ বসাতে গিয়ে দেদার খরচ করছে তারা।
বিভিন্ন স্টেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাট আউট সমন্বিত ওই সেলফি বুথ বসাতে স্টেশন-পিছু কত টাকা খরচ হচ্ছে, তা সম্প্রতি তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চান রেলের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক অজয় বসু। জানতে চান, কোথায়, কতগুলি বুথ বসানো হচ্ছে। প্রাক্তন রেল-কর্তার ওই প্রশ্নের উত্তরে মধ্য-রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অভয় মিশ্র জানিয়েছেন, স্থায়ী থ্রি-ডি সেলফি বুথ বসাতে প্রত্যেকটির জন্য ৬.২৫ লক্ষ টাকা এবং অস্থায়ী বুথের ক্ষেত্রে ১.২৫ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে।
এই তথ্য-সংবলিত সংবাদের কাটিং পোস্ট করে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা এক্স হ্যান্ডলে বিতর্ক উস্কে দিয়ে বুধবার বলেছেন, “প্রবীণদের টিকিটে ছাড় বাতিল করে রেল গত দু’বছরে ২২৪২ কোটি টাকা আয় করেছে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি ওই টাকা কোথায় যাচ্ছে।”
তথ্যের অধিকার আইনে রেলের অন্যান্য জ়োনের কাছে এই সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হলেও মধ্য-রেল ছাড়া আর কেউই সব প্রশ্নের উত্তর দেয়নি বলে খবর। উত্তর-দক্ষিণ এবং পশ্চিম-রেল এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে কোনও সংখ্যা জানাতে চায়নি। একা মধ্যে রেল ওই খাতে ১.৬২ কোটি টাকা খরচ করেছে।
স্পষ্টতই বিষয়টি নিয়ে রেলের অভ্যন্তরে অস্বস্তি বেড়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের প্রচারের অঙ্গ হিসেবে সারা দেশের সব ডিভিশনেই বাছাই করা স্টেশনে প্রধানমন্ত্রীর কাট আউট সমন্বিত সেলফি বুথ বসেছে। সেখানে রেলকর্মী ছাড়াও সাধারণ যাত্রীদের প্রধানমন্ত্রীর ছবির সঙ্গে সেলফি তুলে তা বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে পোস্ট করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
রেলের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ জ়োনেই ডিভিশন-পিছু ১০টি করে স্টেশন বেছে ওই সেলফি বুথ বসানো হচ্ছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন স্টেশনে অস্থায়ী বুথও বসানো হচ্ছে। একা মধ্য-রেল ওই খাতে ১.৬২ কোটি টাকা খরচ করেছে। রাজ্যে পূর্ব রেলের আসানসোল, বর্ধমান, নৈহাটি, ব্যারাকপুর, কলকাতা, সোনারপুর-সহ একাধিক স্টেশনে ওই বুথ বসেছে। অন্যান্য জ়োনের মতোই রেলের খরচেই তার বরাত দেওয়া হয়েছে। তবে, ওই খরচের যৌক্তিকতা বা তার পরিমাণ নিয়ে আধিকারিকেরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বিষয়টি ‘উপরতলার’ নির্দেশ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন তাঁরা।