—প্রতীকী ছবি।
বিশেষ ভাবে সক্ষম যাত্রীরা রেলের বিভিন্ন পরিকাঠামো এবং পরিষেবা ব্যবহার করতে গিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নীতি তৈরি করছে রেল। আগামী দিনে স্টেশন উন্নয়নের পরিকল্পনা তৈরি করার কথা ভাবা হয়েছে। পাশাপাশি ওই যাত্রীদের সফরের সুবিধার্থে বর্তমান স্টেশনগুলিতে এখনই কী ধরনের বদল আনা যায়, তা-ও
ভাবা হয়েছে।
সব ধরনের যাত্রীদের কাছেই রেলের সফর এবং পরিষেবা সহজগম্য করে তোলাই নতুন নীতির উদ্দেশ্য। সহায়কের সাহায্য ছাড়া অথবা ন্যূনতম সাহায্য নিয়ে যাতে বিশেষ ভাবে সক্ষম যাত্রীরা নিজেরাই যাবতীয় সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই নীতির খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
মূল পাঁচটি লক্ষ্য রেখে খসড়া তৈরি হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। রয়েছে স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের নির্দিষ্ট কোচের নাগাল সহজসাধ্য করা। সফর এবং পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য জানাতে রেলের যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাকে উপযোগী করে তোলা। যাতে বিশেষ ভাবে সক্ষম যাত্রী নিজেই সে সম্পর্কে জেনে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রয়োজনে অভিযোগ জানাতে এবং দরকারি সাহায্য চাইতেও পারেন।
রয়েছে স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং নির্দিষ্ট কামরা পর্যন্ত পৌঁছতে লিফট, র্যাম্প, হ্যান্ড রেলের ব্যবস্থা করা। কম উচ্চতার টিকিট কাউন্টার এবং শৌচালয় তৈরির প্রস্তাবও রয়েছে খসড়ায়। ওই যাত্রীদের সাহায্য করতে বিশেষ কিয়স্ক চালুর ভাবনাও রয়েছে। প্ল্যাটফর্মে পিছলে যাওয়া এড়াতে বিশেষ টাইলস বসানো, দৃষ্টিহীন যাত্রীদের জন্য কিছুটা উঁচু পৃষ্ঠের বিশেষ ‘ডাক টাইলস’ বসানোর পরিকল্পনাও রয়েছে রেলের।
উন্নত এবং বিশেষ ‘সাইনেজ’ ব্যবহার ছাড়াও ট্রেনের কামরা, আসন, শৌচালয়ে ব্রেল হরফের ব্যবস্থা করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। যাত্রীরা স্টেশন এবং কামরায় ‘প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম’ যাতে সহজে ব্যবহার করতে পারেন তার উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। কামরায় স্টেশনের অবস্থান, গন্তব্য জানাতে বোর্ডে লেখার পাশাপাশি যাত্রীদের কর্ণগোচর করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সফরের আগে বা সফরের মধ্যে কোনও নির্দিষ্ট ট্রেন বা স্টেশনে বিশেষ ভাবে সক্ষম যাত্রীদের জন্য কী ধরণের সুবিধা এবং পরিষেবা রয়েছে, কোথায় গেলে তা পাওয়া যাবে তার আগাম তথ্য দিতে বিশেষ বৈশিষ্ট্য যুক্ত অ্যাপ তৈরির কথাও ভাবা হয়েছে। সেখানে জরুরি বিষয় খোঁজার জন্য ‘টেক্সট টু স্পিচ’ (মুখে বলে খোঁজার ব্যবস্থা) প্রযুক্তি ছাড়াও বিভিন্ন সিঙ্গেল ক্লিক আইকন বসানোর কথাও বিবেচনায় রয়েছে। একাধিক পরিষেবা ওই অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়ার পাশাপাশি অভিযোগ জানাতে রেল মদত ব্যবস্থাকেও নতুন অ্যাপের আওতায় আনা হবে।
এক রেল কর্তার কথায়, ‘‘নতুন নীতি চূড়ান্ত করতে এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত চাওয়া হয়েছে। নীতি কার্যকর হলে ভারতীয় রেলের স্টেশন এবং ট্রেন সফরে গুরুত্বপূর্ণ বদল আসবে।’’