ছবি: সংগৃহীত।
রেলে সংস্কারের নামে সম্প্রতি গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে কর্মী সংগঠনগুলির মধ্যে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে এক সপ্তাহ ধরে দেশ জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া রেলওয়েমেনস ফেডারেশন (এআইআরএফ)। বসে নেই রেল বোর্ডও। কর্মীদের বিক্ষোভ ঠেকাতে আগামী এক সপ্তাহ যাবতীয় ছুটি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে তারা।
ছুটি বাতিলের পাশাপাশি রেলের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হলে কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। রেল বোর্ডের তরফে কয়েক দিন আগে পাঠানো এই নির্দেশ সংবলিত চিঠি নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ তীব্রতর হয়েছে বিভিন্ন কর্মী সংগঠনের মধ্যে। এই নির্দেশ দমনমূলক এবং নজিরবিহীন বলে অভিযোগ তুলেছেন রেলের কর্মী সংগঠনের নেতারা।
এআইআরএফের শাখা সংগঠন ইস্টার্ন রেলওয়েমেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিতকুমার ঘোয বলেন, ‘‘রেলে কর্মী সঙ্কোচনের জন্য যে-ভাবে বিভিন্ন দফতরকে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখে আপস করা হচ্ছে যাত্রী-নিরাপত্তার সঙ্গে। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে গিয়ে আগে কখনও এমন আগ্রাসনের মুখে পড়তে হয়নি।’’
আরও পড়ুন: একঘরে করলে কোথায় যাব? আর্তি সর্বানন্দের
অমিতবাবুর অভিযোগ, দায় কমিয়ে রেলকে ধাপে ধাপে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টাকে প্রশাসনিক সংস্কার বলে চালাচ্ছে রেল মন্ত্রক। রেলকর্মীরা তো বটেই, আধিকারিকেরাও এখন বুঝতে পারছেন, পরিস্থিতি তাঁদের পক্ষেও উদ্বেগজনক। তাই তাঁদের অনেকেও আড়ালে কর্মীদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছেন।
ন্যাশনাল ফেডারেশন ফর ইন্ডিয়ান রেলওয়ে (এনএফআইআর)-এর শাখা সংগঠন ইস্টার্ন রেলওয়েমেনস কংগ্রেসের সভাপতি বিনোদ শর্মাও রেলকর্মীদের ছুটি বাতিলের নির্দেশ অগণতান্ত্রিক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সরকার রেলের ক্ষেত্রে যে-সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার জেরে তারা নিজেরাই এখন কর্মীদের ভয় পেতে শুরু করেছে।’’
আজ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ জুড়ে সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে রেলের বিভিন্ন জ়োন এবং ডিভিশন ছাড়াও কারশেড এবং ওয়ার্কশপেও বিক্ষোভ সংগঠিত করার কথা জানিয়েছেন এআইআরএফ নেতৃত্ব। ৮ জানুয়ারি দেশ জুড়ে ট্রেড ইউনিয়ন ধর্মঘটকেও সমর্থন জানিয়েছেন তাঁরা।
এনএফআইআর নেতৃত্ব এখনও নির্দিষ্ট ভাবে বিক্ষোভের দিনক্ষণ জানাননি। তবে তাঁরাও বিক্ষোভ আন্দোলনের পক্ষে। প্রধান দু’টি কর্মী সংগঠনের জোটবদ্ধ বিক্ষোভের জেরে রেলের পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে প্রশাসনিক শিবির সূত্রের খবর। ওই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতেই আগাম ছুটি বাতিলের নির্দেশ বলে জানান এক রেলকর্তা। ট্রেন চলাচলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কাজে কোথাও গাফিলতি দেখলে ১৯৮৯ সালের রেল আইনের আওতায় তাঁদের বিরুদ্ধে ১৭৩, ১৭৪ এবং ১৭৫ ধারায় অভিযুক্ত করে শাস্তির সুপারিশ করা হবে।