প্রতীকী ছবি।
রেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা এবং ওয়ার্কশপগুলির আধুনিকীকরণের দায়িত্ব ছিল তার। সেই সংস্থা সেন্ট্রাল অর্গানাইজ়েশন অব মডার্নাইজ়েশন অব ওয়ার্কশপের (কফমো) ঝাঁপ বন্ধ হচ্ছে আগামী ১ ডিসেম্বর। সংস্থার অধীনে থাকা যাবতীয় সম্পত্তি এবং ভবন আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রেলবোর্ডের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রেল জানিয়েছে, নতুন কোনও কাজের জন্য টেন্ডার ডাকার কফমো-র যাবতীয় ক্ষমতাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। যে সব টেন্ডার আগেই ডাকা হয়েছে, তার কাজও রেলের আঞ্চলিক দফতরগুলির (জ়োন) হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংস্থার ওয়েবসাইট থেকেও সংস্থার কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্যের বিবরণ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
রেল সূত্রের খবর, ১৯৭৯ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় তৈরি হয় সংস্থাটি। রেলের বিভিন্ন উৎপাদন সংস্থা এবং ওয়ার্কশপগুলির আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ দেওয়া ছাড়াও তা বাস্তবায়িত করারও দায়িত্ব ছিল ওই সংস্থার উপরে। রেলের কোচ এবং ইঞ্জিন কারখানা ছাড়াও সারা দেশে সবক’টি ওয়ার্কশপে আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা এবং প্রযুক্তিগত ভাবে তার প্রয়োগ কী ভাবে হবে, সবই ঠিক করত কফমো। এমনকি রেলের উৎপাদন সংস্থাগুলোতে এবং বিভিন্ন ওয়ার্কশপে কর্মী এবং আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করত তারা। পূর্ব রেলের অধীনে থাকা লিলুয়া এবং জামালপুর ওয়ার্কশপে বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্র কেনা ছাড়াও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ওই সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে রেল সূত্রের খবর।
গত চার দশকে সংস্থার তত্ত্বাবধানে ৭ হাজার ৬৫০ কোটি টাকায় ২৪ হাজার ৭০০-র বেশি যন্ত্র কেনা হয়েছে। আর্থিক খরচের বোঝা কমাতে ওই সংস্থার ঝাঁপ গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যালের নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশ মেনে ওই কাজ করা হচ্ছে বলেও রেলের একটি সূত্র জানিয়েছে। এর আগে, ওই কমিটির সুপারিশে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে স্টেশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। স্টেশন উন্নয়নের যাবতীয় কাজ সংশ্লিষ্ট জ়োনাল রেল বা অঞ্চলের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন জ়োনের হাতে থাকা জমি লিজ় দেওয়ার ক্ষেত্রে যাবতীয় ক্ষমতা রেলওয়ে ল্যান্ড ডেভেলমেন্ট অথরিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ওই কমিটির সুপারিশে ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ় অর্গানাইজ়েশন অব অল্টারনেটিভ ফুয়েল (আইআরওএএফ) ইতিমধ্যেই গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। কমিটির সুপারিশে আইআরসিটিসি এবং রেলটেল-কেও মিশিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
রেল সূত্রের খবর, একই ধরনের কাজ করে এমন সংস্থাগুলিকে মিশিয়ে খরচ কমানোর পাশাপাশি পরিচালন দক্ষতা আমদানি করতেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে। বন্ধ হতে চলা সংস্থা কফমো-র কর্মীদের অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর।