বেসরকারি হাতে ট্রেনের টিকিটও!

রেল বোর্ড সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফায় নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরুর ইঙ্গিত হিসেবে আইআরসিটিসি-র মাধ্যমে দু’টি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা হচ্ছে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০১:০৩
Share:

ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড টুরিজম কর্পোরেশন গত বছর থেকেই বিয়ে বা অন্যান্য প্রয়োজনে আস্ত ট্রেন ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে। এ বার কতকটা বিমানের ধাঁচে টিকিট বিক্রি এবং যাত্রী পরিষেবার অন্যান্য দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে ছেড়ে দিতে চাইছে রেল।

Advertisement

রেল বোর্ড সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফায় নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরুর ইঙ্গিত হিসেবে আইআরসিটিসি-র মাধ্যমে দু’টি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। আইআরসিটিসি-র ট্রেন ভাড়া দেওয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করেই পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি আছে, এমন গন্তব্যে নতুন ট্রেন চালিয়ে দেখা হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলি কোন পথে কী ভাবে ট্রেন ভাড়া নিতে আগ্রহী, তা জানতে তাদের কাছে আগ্রহপত্র চাওয়া হবে। সেই নথি খতিয়ে দেখে পাইলট প্রকল্প তৈরি করবে রেল। প্রকল্পে সাড়া পাওয়া গেলে বেসরকারি সংস্থার হাতে টিকিট বিক্রি এবং অন্যান্য পরিষেবার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব মহলের পাশাপাশি ট্রেড ইউনিয়নের মতামতও নেবে রেল বোর্ড।

কেন এই পরিকল্পনা?

Advertisement

ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করতে সফরের সময় কমিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে নির্ঝঞ্ঝাট করতে চায় রেল। ইঞ্জিন কাটা-জোড়া ছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণে বিপুল সময়ের অপচয় কমানোও এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে অল্প সময়ে বেশি যাত্রী বহন করে টিকিটের আকাল দূর করতে চাইছে তারা। টিকিটে ভর্তুকির বোঝাও দ্রুত ঝেড়ে ফেলতে চায় রেল। যাত্রী পরিবহণে রেলের খরচের মাত্র ৫৩ শতাংশ আসে টিকিট বিক্রি থেকে। রান্নার গ্যাসের ধাঁচেই ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানানোর কথা ভাবছে রেল। এই বিষয়ে দেশ জুড়ে ব্যাপক প্রচারের কথাও ভাবা হচ্ছে। টিকিট কাটার সময় যাত্রীদের ভর্তুকি ছেড়ে দিতে উৎসাহিত করা হবে। অতীতে ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ দিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মিলেছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এই ভাবনা।

কী ভাবে এগোতে পারে পরিকল্পনা? রেল বোর্ড সূত্রের খবর, যে-সব শাখায় ট্রেনের ভিড় কম এবং মোটামুটি ১২ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছনো যায়, বেসরকারি উদ্যোগে সেই সব রুটে ট্রেন চালাতে চায় রেল। সকালে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় পৌঁছনো যায় বা রাতে রওনা হয়ে সকালে পৌঁছনো যায়, এমন দূরত্বের মধ্যে থাকা পর্যটন কেন্দ্রগুলি অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে। ওই সব শাখায়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ধাঁচে ‘ট্রেন-সেট’ ভাড়া দিতে চাইছে রেল।

ট্রেন ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়ায় দূর পাল্লার ট্রেনের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে পারে বলে রেলের আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা। বয়স্ক, অশক্ত বা মহিলাদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঘা পড়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। এই প্রসঙ্গে রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘আশঙ্কা অমূলক। সময়ানুবর্তিতা এবং স্বাচ্ছন্দ্য বাড়লে যাত্রীরা আশ্বস্তই হবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement