তালিবানকে ঠেকাতে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন ঘোরবন্দের স্থানীয় বাসিন্দারাই। ছবি: রয়টার্স।
ফের তালিবান আধিপত্য কায়েম হচ্ছে আফগানিস্তানে। তার জেরে সেখান থেকে নাগরিকদের দেশে ফেরাতে তৎপর হল দিল্লি। কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস-সহ মোট চারটি কনস্যুলেট রয়েছে ভারতের। ভারতীয় সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও রয়েছেন সেখানে, এত দিন যাঁরা আফগান সেনা এবং সে দেশের পুলিশ বাহিনীকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। কিন্তু আমেরিকার সেনা সরাতে শুরু করার পর থেকে যে ভাবে একের পর এক অঞ্চল তালিবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে, তাতে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই সাউথ ব্লকের তরপে ভারতীয়দের ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দিল্লি সূত্রে খবর।
দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিবান আধিপত্য থেকে বাঁচতে আফগানিস্তানের সরকারি আধিকারিকরাই গা ঢাকা দিতে শুরু করেছেন। অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন তাঁরা। এমন পরিস্থিতিতে কাবুল, কান্দাহার, মাজার-ই-শরিফ-এর মতো শহর থেকে নিরাপত্তাবাহিনী-সহ সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীকে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে উদ্ধারকার্য চালানো হবে, তার নীল নকশাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলি পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
এপ্রিল মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ ভাবে সেনা তুলে নেওয়ার ঘোষণা করেন। ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। বাইডেনের সেই ঘোষণার পর থেকেই সেখানে শক্তিসঞ্চয় করতে শুরু করেছে তালিবান। ইতিমধ্যেই উত্তরের বহু অঞ্চল তাদের দখলে চলে গিয়েছে। আফগান সেনার বহু কর্মীই তালিবানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। আবার শনি ও রবিবার তালিবানের সঙ্গে লাগাতার সংঘর্ষ চলার পরে সোমবার প্রতিবেশী তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন এক হাজারেরও বেশি আফগান সেনা। তাতেই ভারতের তরফে নাগরিকদের দেশে ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে।
কাবুলে পাসপোর্ট দফতরের বাইরে সন্তান কোলে নিয়ে ভিড় মহিলাদের। ছবি: পিটিআই।
দূতাবাস, কনস্যুলেট এবং সেনাবাহিনীর শিবির থেকে সকলকেই ফিরিয়ে আনা হবে কি না, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয় যদিও। তবে জালালাবাদ এবং হায়রতের ভারতীয় কনস্যুলেট দু’টি ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে শুধু ভারতই নয়, অন্য দেশের তরফেও নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তৎপরতা শুরু হয়েছে। এমনকি আফগান নাগরিকরাও ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন। বুধবার কাবুলে পাসপোর্ট দফতরের বাইরে সন্তানদের কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় শত শত মহিলাকে। নিজের বাড়িতেই নিরাপদ বোধ করছেন না বলে জানান তাঁরা।