বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
দিনে বাণিজ্য, রাতে সন্ত্রাস বরদাস্ত করবে না ভারত। পাকিস্তানকে নিশানা করে এই মর্মে সরব হলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সার্কভুক্ত দেশগুলির বৈঠক নিয়ে কথা বলতে গিয়েই পাকিস্তানকে আক্রমণ করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। এক আলাপচারিতায় বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “যত ক্ষণ পর্যন্ত সার্কের একটি সদস্য দেশও সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে, তত ক্ষণ ভারত সার্ক-এর সভায় যোগ দেবে না।” পাকিস্তানকে নিশানা করে তাঁর মন্তব্য, “ভারত এমন পরিস্থিতি কোনও মতেই সহ্য করবে না, যেখানে রাতে জঙ্গি কার্যকলাপ চলে আর দিনে ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজ হয়।”
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০১৪ সালে ব্যতিক্রমী বিদেশনীতির উদাহরণ তৈরি করতে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে নিজের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ডেকেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। শুধু তা-ই নয়, পথ বদল করে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পৌঁছে গিয়েছিলেন লাহোরে শরিফ পরিবারের একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে। তার ঠিক এক সপ্তাহ পরেই পঠানকোটের বায়ুসেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালায় পাক মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিরা। এর পরে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের জেরে ক্রমশ সার্ক সংগঠনটি কার্যত অকেজো হয়ে পড়ে। সার্কের সদস্য দেশগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মলদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা-সহ দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশ। অন্য দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “কয়েক বছর ধরে সার্ক-গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে আলোচনার না-হওয়ার পিছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সার্ক-এ এমন এক সদস্য দেশ রয়েছে, যারা সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই জানে না। সুসম্পর্ক বজায় রাখার শর্তই পূরণ করে না। সে কারণেই ভারত সার্কের বৈঠকে যোগ দিচ্ছে না।”
জয়শঙ্করের কথায়, “সাম্প্রতিক সময়ে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে কোনও রকম আপসের প্রশ্নই ওঠে না। সমস্যা রয়েছে এবং সেই সমস্যাগুলি বোঝারও সময় এসেছে। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান একেবারেই ব্যতিক্রম। সন্ত্রাসবাদের মতো জঘন্য কার্যকলাপ কোনও আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে বলে ভারত মনে করে না। যত ক্ষণ আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বজায় থাকবে, তত ক্ষণ আলোচনার মাধ্যমে কোনও সমাধানে পৌঁছনো সম্ভব নয়।”