পরিবার জানত, ছেলে লন্ডনে পড়াশোনা করছে। ভুল ভাঙে দিন দশেক আগে, একটি এসএমএস পেয়ে। আরবি ভাষায় লেখা এসএমএসটি অনুবাদ করে তারা জানতে পারে, তাদের ছেলে দেড় মাস আগে মারা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তেলঙ্গনার বাসিন্দা মহম্মদ হানিফ ওয়াসিম (২৭) চার বছর আগে হায়দরাবাদ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তার পর স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করার জন্য তিনি লন্ডন চলে যান। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে লন্ডন থেকে সিরিয়া যান হানিফ। তার পরেই তাঁর মৃত্যু সংবাদ আসে। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা জানতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে তেলঙ্গনা পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, বিভিন্ন ওয়েবসাইটের দৌলতে সম্প্রতি জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয় হানিফের। তাই তিনি লন্ডন থেকে সিরিয়া চলে যান। এক পুলিশকর্তা এ দিন বলেন, ‘‘হানিফ সিরিয়া গিয়ে আইএস-এ যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’’
পুলিশ জানায়, তেলঙ্গনার আদিলাবাদে হানিফের পরিবারের কাছে দিন দশেক আগে আরবি ভাষায় লেখা একটি এসএমএস আসে। তাতে লেখা, ‘মৃত্যু হয়েছে হানিফের।’ তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এসএমএস আসার আগেই মার্চ মাসে মৃত্যু হয়েছে হানিফের। তা হলে, সেই সংবাদ এত দেরিতে পরিবারকে জানানো হল কেন, তা নিয়েও খোঁজ খবর করছে পুলিশ। এক পুলিশকর্তা জানান, অনুমান আইএস-এর পক্ষ থেকেই হানিফের মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে। তবে, তদন্ত চলছে। ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণই হোক বা দুর্ঘটনা — হানিফের মৃত্যু নিয়ে কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আইএস নিয়ে প্রচারের ফলে দেশ-বিদেশ থেকে বহু যুবক-যুবতী এই গোষ্ঠীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাতে যোগ দিচ্ছেন। এর প্রভাব থেকে বাদ পড়েনি ভারতও। গত বছর ছ’জনকে পাকড়াও করে হায়দরাবাদ পুলিশ। তাঁদের দু’জন ইঞ্জিনিয়ার এবং এক জন গুগল-এর প্রাক্তন কর্মী ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। হায়দরাবাদের আরও এক তরুণী কাতার থেকে তুরস্কে উড়ে যান গত বছর। তাঁরও আইএস-এ যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল। তবে, সেখানকার অস্থির পরিস্থিতি দেখে ওই তরুণী ভারতে ফিরে আসেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।