প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ ও বেসরকারিকরণ নিয়ে ঢাক পেটালেও তা থেকে আশানুরূপ আয় হয়নি। সে কারণেই মোদী সরকারকে একশো দিনের কাজের প্রকল্প, সামাজিক কল্যাণের মতো বিভিন্ন প্রকল্প থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কমাতে হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গতকাল বাজেট পেশের পর থেকে বিরোধীরা সামাজিক ক্ষেত্রে বরাদ্দ কমানো নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করছে। অভিযোগ, একশো দিনের কাজে ব্যয়বরাদ্দ ৩৩ শতাংশ কমানো হয়েছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্যেও বরাদ্দ কমেছে। মানব উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পেও বরাদ্দ ছাঁটাই করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, কোভিডের পরে গত তিন বছর ধরেই মোদী সরকারের অগ্রাধিকার— পরিকাঠামোয় খরচ বাড়িয়ে আর্থিক বৃদ্ধির সড়ক প্রশস্ত করা। পরিকাঠামোয় খরচ বাড়াতে গিয়েই সামাজিক ক্ষেত্রে খরচ কমাতে হয়েছে। কারণ, অর্থমন্ত্রীকে রাজকোষ ঘাটতি কমাতে হয়েছে। তাঁর আশামতো বিলগ্নিকরণ থেকে আয়ও হয়নি। চলতি অর্থ বছরে বিলগ্নিকরণ থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা ঘরে তোলার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩১,১০৬ কোটি টাকা ঘরে এসেছে। তাই চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা করে আগামী বছরের জন্যও ৫১ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বিলগ্নিকরণ দফতরের সচিব তুহিন পাণ্ডের অবশ্য দাবি, ‘‘বিলগ্নিকরণ অনেকখানি শেয়ার বাজারের উপরে নির্ভর করছে।’’
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ রথীন রায়ের মত, গত চার বছর ধরে কেন্দ্র রাজস্ব খাতে আয় বাড়াতে পারছে না। গত সাত বছর ধরে কর-সহ রাজস্ব খাতে আয় জিডিপি-র ৭ শতাংশে আটকে রয়েছে। এ দিকে সরকারের অগ্রাধিকার হল পরিকাঠামোয় ব্যয়। বাজেট থেকে পরিকাঠামোয় ব্যয় বাড়লেও পরিকাঠামোয় মোট ব্যয় বাড়ছে না। কারণ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি পরিকাঠামোয় যথেষ্ট খরচ করতে পারছে না। সেই অভাব কেন্দ্রীয় সরকারকে পূরণ করতে হচ্ছে। তার জন্য খাদ্য, সার, পেট্রোপণ্যে ভর্তুকিতে খরচ ছাঁটাই করতে হয়েছে। কিন্তু সেখানে খরচ বাঁচিয়ে সরকার যে একশো দিনের কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যে টাকা ঢালতে পেরেছে এমন নয়। ওই খরচ বাঁচিয়ে অর্থমন্ত্রী রাজস্ব ঘাটতি কমিয়েছেন। রথীনের এ বিষয়ে বক্তব্য, ‘‘অর্থমন্ত্রীর সাধুবাদ প্রাপ্য যে তিনি এক টাকা ধার করলে সেই টাকার অর্ধেকের বেশি পরিকাঠামো-সহ মূলধনী খাতেই ব্যয় করছেন। রাজস্ব খাতে খরচ কমই হচ্ছে।’