বিচার চেয়ে আবেদন সেনা জওয়ান প্রভাকরণের। ছবি: সংগৃহীত।
স্ত্রীকে অর্ধনগ্ন করে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। কাশ্মীরে কর্মরত ভারতীয় সেনা জওয়ানের এই অভিযোগের ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই পদক্ষেপ করল সেনাবাহিনী। সেনার তরফ থেকে যোগাযোগ করা হল পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি। বাকিদের খোঁজ চলছে। ওই সেনা জওয়ানের পরিবারকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে।
কাশ্মীরে কর্মরত সেনা জওয়ান হাবিলদার প্রভাকরণ তামিলনাড়ুর পাদাভেদু গ্রামের বাসিন্দা। সম্প্রতি তাঁর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী ভাড়ায় একটি দোকান চালান। তাঁকে ১২০ জন মিলে মারধর করেছে, দোকানের জিনিসপত্র বাইরে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা হয়েছে। ওঁর পরিবারের উপর হামলা করা হয়েছে, পরিবারের লোকেদের ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখানোও হচ্ছে। স্ত্রীকে অর্ধনগ্ন করে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়েছে। ওই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
যদিও কান্ধাভাসালের পুলিশ জওয়ানের অভিযোগকে অতিরঞ্জিত বলে দাবি করছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, গোলমালের সূত্রপাত দোকানের দখলদারি ঘিরে। রেনুগাম্বাল মন্দিরের জমিতে একটি দোকান রয়েছে। জনৈক কুমারের কাছ থেকে সেই দোকানটি প্রভাকরণের শ্বশুরমশাই সেলভামূর্তি পাঁচ বছরের লিজ়ে নিয়েছিলেন সাড়ে ৯ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। কুমারের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে রামু দোকানটি ফেরত চান। সেলভামূর্তিকে রামু জানান, এ জন্য যে অর্থ লিজ় বাবদ তাঁরা পেয়েছিলেন, তা ফিরিয়ে দেবেন। এ নিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি দু’তরফের মধ্যে লিখিত চুক্তিও হয়। কিন্তু রামুর অভিযোগ, সেলভামূর্তি শেষ মুহূর্তে মন বদলান এবং টাকা ফেরত নিতে অস্বীকার করেন। জানিয়ে দেন, দোকান তিনিই চালাবেন। অভিযোগ, গত ১০ জুন যখন রামু টাকা ফিরিয়ে দিতে এই দোকানে গিয়েছিলেন তখন তাঁকে মারধর করা হয়। এর পরেই রামুর পরিচিত লোকজন এসে দোকানে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় দোকান সামলানো সেলভামূর্তির মেয়ে কীর্তি অর্থাৎ প্রভাকরণের স্ত্রীকে। রামুর দাবি, কীর্তির গায়ে হাত পড়েনি। যদিও সে দিন বিকেলেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় কীর্তিকে। দাবি করা হয়, মারধরে তিনি গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। যদিও প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, মারধরের অভিযোগ মোটেই ঠিক নয়। কান্ধাভাসাল পুলিশ দু’তরফের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করেছে।
এর পরেই ভিডিয়োয় অভিযোগ করেন প্রভাকরণ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করল সেনাবাহিনী। এই বিষয়ে সেনার নর্দার্ন কমান্ড টুইটারে লিখেছেন, “সেনার পোশাক পরিহিত এক জওয়ান তাঁর পরিবারের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত হয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।” নর্দার্ন কমান্ডের তরফে আরও লেখা হয়েছে, “সেনা জওয়ান এবং তাঁর পরিবারে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। স্থানীয় সেনা আধিকারিকরা ওই জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকেও ওই সেনা পরিবারকে সুরক্ষার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”