ডিম ভাঙতে হাতুড়ি। ভিডিয়ো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
পদ গ্রহণের কিছু দিনের মধ্যেই, সিয়াচেনের একটি বেস ক্যাম্পে সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন নয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেখানে তাঁকে সেনাদের সঙ্গে জিলিপি ভাগ করে খেতেও দেখা যায়। তবে সিয়াচেনে জীবনধারণ তো বটেই, সেনার খাওয়াদাওয়ার বাস্তব পরিস্থিতি যে কতটা কঠিন, এ বার তা সামনে এল। সম্প্রতি টুইটারে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যেখানে ডিম হাতে এক জওয়ানকে বলতে দেখা যাচ্ছে, ‘‘হাতুড়ি দিয়ে মারলেও এই ডিম ভাঙার নয়।’’
সিয়াচেনে জওয়ানদের খাবারের অবস্থার উপর তৈরি হওয়া ওই ভিডিয়োতে আরও দেখা যাচ্ছে, এক জওয়ান ফলের রসের টেট্রা প্যাক খুলে দেখছেন, পুরোটাই জমে বরফ হয়ে গিয়েছে! একটি পাত্রে সেটি ফুটিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। আলু, টোম্যাটো, পেঁয়াজ বা আদার মতো আনাজও ঠান্ডায় পাথরের মতো শক্ত হয়ে গিয়েছে। এক জওয়ান সেগুলিকে বারবার কাটার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শেষে হাতুড়ির ঘা দিচ্ছেন। তবে তাতেও কোনও লাভ হচ্ছে না।
ভিডিয়োর শেষ ভাগে জওয়ানদের হতাশা স্পষ্ট। এক জওয়ান বলছেন, ‘‘দেখলেন তো, এই কারণেই এখানকার পরিস্থিতিতে জীবনধারণ মোটেই সহজ নয়। তাপমাত্রা প্রায়ই মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নেমে যায়।’’
সিয়াচেনে জীবনধারণের প্রাথমিক সরঞ্জামগুলি পৌঁছনোও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কপিকলের সাহায্যে তা পৌঁছনো হয়। শীতকালে বরফের জেরে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অবশ্য ‘লাইট চিতা হেলিকপ্টার’ই খাবার এবং অস্ত্র সরবহরাহের একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে লোকসভায় পেশ হওয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৯৮৪ সাল থেকে সিয়াচেনে খারাপ আবহাওয়া এবং পরিবেশ সংক্রান্ত অন্যান্য কারণে প্রাণ গিয়েছে ৮৬৯ জন জওয়ানের। ২০১৬ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার রিপোর্টে উঠে আসে, কঠিন আবহাওয়া কিংবা তুষার ধসের শিকার হয়েই প্রতি মাসে গড়ে দু’জন সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয় সিয়াচেনে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।