Ladakh

লাদাখের হাড় হিম করা ঠান্ডা আর চিনের সঙ্গে লড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছে সেনা

চুমার ডেমচক এলাকায় টি-৯০ ও টি-৭২ ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা মহড়া চালাচ্ছেন সেনা জওয়ানরা। রয়েছে বিএমপি-২ ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিক্যালস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লাদাখ শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৫৫
Share:

লাদাখে ট্যাঙ্কার নিয়ে মহড়া ভারতীয় সেনার। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

চিনের সঙ্গে প্রস্তুতি ছিলই। এ বার পূর্ব লাদাখে প্রকৃত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় তীব্র ঠান্ডার মোকাবিলাতেও প্রস্তুত হচ্ছে ভারতীয় সেনা। প্রায় ১৪,৫০০ ফুট উচ্চতায় বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাঙ্ক-সহ সমস্ত পদাতিক যুদ্ধযান নিয়ে প্রস্তুত সেনা জওয়ানরা। মাইনাস ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও যুদ্ধ করতে সমান পারদর্শী— এমন যুদ্ধযান মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে মহড়া।

Advertisement

শীতের মরসুমে মাইনাস ২০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায় পূর্ব লাদাখের তাপমাত্রা। প্রতি বছরই শীত আসার আগে তার জন্য প্রস্তুতি চলে সেনাবাহিনীতে। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। মে মাস থেকে প্যাংগং লেক, গালওয়ান উপত্যকা-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় আগ্রাসন শুরু করে চিনা বাহিনী। ভারতও প্রচুর সেনা মোতায়েন করে। তার জেরে ১৫ জুন গালওয়ানে ঘটে যায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। তার পর কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে বৈঠকের পর বৈঠকে উত্তেজনা কিছুটা স্তিমিত হয়। কিন্তু এ মাসের গোড়ায় ফের প্যাংগং লেক এলাকায় তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়। দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও যে কোনও সময় ফের পরিস্থিতি বিগড়াতে পারে। তাই এ বছর শীতের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় সেনা।

চুমার ডেমচক এলাকায় টি-৯০ ও টি-৭২ ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা মহড়া চালাচ্ছেন সেনা জওয়ানরা। এ ছাড়া রয়েছে বিএমপি-২ ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিক্যালস। মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাতেও সমান দক্ষতায় যুদ্ধ করতে সক্ষম এই যুদ্ধযানগুলি। যে কোনও রকম চরমভাবাপন্ন অর্থাৎ তীব্র গরম বা ঠান্ডা, পাহাড়ি অথবা সমতল কিংবা জলে সমান পারদর্শী বাহিনীও থাকছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র মোকাবিলায়। মহড়ায় অংশ নিয়েছেন তাঁরাও। ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য যুদ্ধযান, অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, প্রতিকূল আবহাওয়ায় বসবাসের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত কাঠামো-সহ যাবতীয় সরঞ্জামে সম্পূর্ণ বাহিনীকে সেনার পরিভাষায় বলা হয় ‘মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি’ বা সংগঠিত পদাতিক বাহিনী। পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিস্তৃত সিন্ধু নদের ধার বরাবর নদী পার হওয়া, যে কোনও প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করা-সহ মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি পূর্ণ রেজিমেন্টের এই প্রদর্শন ও মহড়া চলছে এই বাহিনীর।

Advertisement

আরও পড়ুন: চিনে ট্রায়াল শেষ না করেই করোনা টিকা মানুষকে! চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধের পুরো প্রস্তুতির দায়িত্বভার রয়েছে ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’-এর উপর। এই বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা মেজর জেনারেল অরবিন্দ কপুর বলেন, ‘‘শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীতে একমাত্র ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’ এই রকম চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার মোকাবিলা করেও যুদ্ধ করতে সক্ষম। এই সব ট্যাঙ্ক, যুদ্ধযান ও অস্ত্রশস্ত্রগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা এখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ। অস্ত্রশস্ত্র ও সেনা দুই তরফেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।’’

আরও পড়ুন: রাজ্যসভায় কৃষি বিল সঙ্ঘাত, ফারাক সরকারি বয়ান আর ভিডিয়ো ফুটেজে

মেজর জেনারেল কপুর আরও বলেন, ‘‘মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি বা সংগঠিত পদাতিক বাহিনী ভারতীয় সেনার মধ্যেই আরও এক ধাপ উন্নত বাহিনী। দ্রুত বহনযোগ্য গোলাবারুদ ও মিসাইল ভান্ডার থাকায় এই বাহিনী অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করতে পারে। সংগঠিত বাহিনীর জওয়ানরা প্রায় সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র চালাতে সক্ষম।’’ তিনি জানিয়েছেন, বিশেষ শীতের পোশাক-সহ যাবতীয় প্রশিক্ষণের পর বাহিনীর মনোবল তুঙ্গে। খুব অল্প সময়ের নির্দেশেও দ্রুত দায়িত্ব পালনে তাঁরা প্রস্তুত। মেজর জেনারেল কপুর বলেন, ‘‘পুরো শীতকাল জুড়েই এই প্রক্রিয়া চলবে।’’

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, তীব্র ঠান্ডার মধ্যেও বসবাসের উপযোগী অস্থায়ী বাসস্থান তৈরিতেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। আনা হয়েছে আগে থেকে তৈরি করে রাখা কাঠামো, যা খুব কম পরিমাণ সিমেন্ট বালি ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে। বাথরুম, রান্নাঘর-সহ আধুনিক বসবাসের মতো প্রায় সব কিছুই থাকছে। বিনোদনের জন্য প্রতিটি কোম্পানির জন্য সেট টপ বক্স কানেকশন-সহ একটি করে টিভি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement