লাদাখে ভারতীয় সেনা। —ফাইল চিত্র
দেশের সামনে জোড়া চ্যালেঞ্জ। এক দিকে কোভিড-১৯, অন্য দিকে সীমান্তে আগ্রাসন। স্বাধীনতা দিবসে বেজিংয়ে তেরঙ্গা পতাকা তোলার পরে এই কথাই বললেন সে দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিশ্রি। বর্ষীয়ান অফিসার কোনও দেশের নাম না-করলেও তিনি যে লাদাখে চিনা আগ্রাসনের কথাই বলছেন, বুঝতে অসুবিধে হয়নি। তার চেয়েও বড় কথা, এমন ‘জোড়া প্রতিকূল পরিস্থিতি’-র বিরুদ্ধে লড়াইকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
বেজিংয়ের ইন্ডিয়া হাউসে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আজ অনেক অনাবাসী ভারতীয় ছিলেন। সেখানে পতাকা উত্তোলনের পরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বক্তৃতা পাঠ করেন মিশ্রি। চিন-প্রবাসী ভারতীয়দের কী ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়, নিজের বক্তৃতায় তা ছুঁয়ে যান রাষ্ট্রদূত। করোনা পরিস্থিতিতে বিমান বন্ধের ফলে চিনে বসবাসকারী ভারতীয়দের পরিবারের কেউ কেউ যে ভারতে আটকে রয়েছেন, সে কথাও বলেন তিনি। তার পরে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার সূত্র ধরেই করোনা ও সীমান্তে আগ্রাসনের প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় আপনারা শুনেছেন, ২০২০ একটা অস্বাভাবিক বছর, আমরা যারা চিনে আছি, তাদের জন্যও বটে। ভারতে আমরা দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছি— কোভিড ও সীমান্তে আগ্রাসন। আজ আমরা যে অবস্থার মুখোমুখি, তা স্বাধীনতা সংগ্রামের চেয়ে অন্য রকম নয়। স্বাধীনতা আনতে আমাদের দেশবাসীরা যে সংগ্রাম করেছিলেন, এখনও সেই একই রকম চেষ্টা করা দরকার। একই রকম ত্যাগ দরকার। সমাজের সমস্ত স্তরের একজোট হওয়া দরকার।’’
কোভিড অতিমারির সৃষ্টির জন্য চিনকে লাগাতার কাঠগড়ায় তুলেছে আমেরিকা। আজ ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের উল্লেখ করা দু’টি ‘চ্যালেঞ্জের’ ক্ষেত্রেই তাই কার্যত প্রচ্ছন্ন আঙুল উঠল চিনের দিকেই। এ দিন মোদী প্রশাসনের প্রশংসা করে মিশ্রি জানান, অতিমারি সত্ত্বেও শিক্ষা, কর ব্যবস্থা, শ্রম বা অন্য ক্ষেত্রে সংস্কারের পথ থেকে ভারত সরে আসেনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যারা চিনে থাকি, আমাদের জন্যও অনেক কিছুই সূক্ষ্ম ভাবে বদলেছে। তা আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলেছে। চিন সরকারও বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নানা নীতি নিচ্ছে। আমাদের তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’’ ভারতীয়দের সাহায্য করার জন্য দূতাবাস ও বিভিন্ন কনসুলেট খোলা রয়েছে বলে জানান তিনি।