ফাইল চিত্র
পাকিস্তান ও চিন, এই দুই প্রতিবেশীর কথা মাথায় রেখে বায়ুসেনায় অন্তত ৪২ স্কোয়াড্রন বিমান থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন সামরিক বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু আগামী এক দশকে ভারতের হাতে খুব বেশি হলে ৩৫ স্কোয়াড্রনের বেশি বিমান থাকবে না বলে জানিয়ে দিলেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধরি। তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, “চিনের বিমানবাহিনী সীমান্তবর্তী এলাকায় তৎপরতা বাড়ালও তাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বায়ুসেনা।”
বায়ুসেনা প্রধানের বক্তব্য, বয়সের কারণে এখন মিগ-২১ ও মিগ-২৯, পরে জাগুয়ার ও মিরাজ বসিয়ে দিতে হবে। সেগুলির পরিবর্তে ৮৩টি ভারতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান তেজস ও ১১৪টি বিদেশি যুদ্ধবিমান যোগ দেবে বায়ুসেনায়। হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স (হ্যাল)-এর কাছ থেকে ৬টি হালকা হেলিকপ্টারও পাওয়া যাবে। সব মিলিয়ে আগামী দিনে বায়ুসেনার হাতে থাকবে ৩৫ স্কোয়াড্রন।
তবে চিনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার প্রসঙ্গে চৌধরি বলেন, “সম্প্রতি রাফাল বিমান ও অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের অন্তর্ভুক্তিতে বায়ুসেনার হামলা করার শক্তি এক লাফে অনেকটাই বেড়েছে।” এ ছাড়া, চলতি বছরেই সীমান্ত এলাকায় রাশিয়া থেকে কেনা জমি থেকে আকাশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা বসতে চলেছে বলে জানিয়েছেন বায়ুসেনা প্রধান।
চিন সম্প্রতি লাদাখ সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা সমাবেশ বাড়াতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছিলেন সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণে। স্থলসেনার ধাঁচেই তিব্বত মালভূমি এলাকায় থাকা পুরনো বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিকেও চিন নতুন করে সক্রিয় করে তুলেছে ও বিমান মোতায়েন শুরু করেছে বলে আজ দাবি করেন বায়ু সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, “চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ঠিক ও পাশে তিনটি বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বিমান মোতায়েন করে রেখেছে। এ ছাড়া বিতর্কিত লিপুলেখ ট্রাই-জংশন থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে বুরাঙ্গ এয়ারবেসেও গতিবিধি বাড়িয়েছে চিন।” যদিও বায়ুসেনার মতে, সীমান্তে চিনের বায়ুসেনা গতিবিধি বাড়ালেও, উচ্চতার কারণে সে দেশের বায়ুসেনার পক্ষে ভারতের দিকে কার্যকরী হামলা চালানো বেশ সমস্যার। তুলনায় ভারতীয় বিমানঘাঁটিগুলি কম উচ্চতায় থাকায় অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
গত এক বছরে পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ভারতে অস্ত্র-গোলাবারুদ পাচারের পাশাপাশি সম্প্রতি জম্মু বিমানবন্দরে ড্রোন হামলাও হয়েছে। যা রীতিমতো উদ্বেগে রেখেছে দিল্লিকে। বায়ুসেনা প্রধান আজ এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা শত্রু-ড্রোন ধ্বংস করতে মূলত দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উপরে জোর দিয়েছি।” স্থল-জল-বিমান বাহিনীকে অভিন্ন কমান্ডের অধীনে আনা নিয়ে বিতর্ক চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এ প্রসঙ্গে চৌধরি বলেন, “প্রত্যেক বাহিনীর অন্য বাহিনীকে দরকার হয়। বায়ুসেনা তার বক্তব্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে।”