তালিবানের দখলে কাবুল ছবি: রয়টার্স।
আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কথা বলেই ভারত এগোতে চাইছে। তালিবানের সম্পর্কে অন্য দেশগুলির কী মূল্যায়ন, তা বুঝে নেওয়ার পাশাপাশি আফগানিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে মদত দেওয়া নিয়েও নিজেদের আশঙ্কা অন্য দেশগুলিকে জানিয়ে রাখতে চায় ভারত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত দু’দিন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আজ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে কথা বলেন। জয়শঙ্কর জানান, তাঁদের আলোচনার বিষয় ছিল আফগানিস্তান। জয়শঙ্করের সঙ্গে সৌদি আরবের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী আদেল আলজুবেরেরও ফোনে কথা হয়। সেখানেও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। সূত্রের খবর, কাবুল থেকে ভারতীয় ও আফগান শিখ-হিন্দুদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে নিয়মিত নয়াদিল্লিকে সৌদির মতো দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে আগামিকাল কেন্দ্র আফগানিস্তান নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছে।
কূটনীতিকরা মনে করছেন, ম্যার্কেল ও পুতিনের পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে আরও কিছু রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। গত কাল মোদী-পুতিন কথার পরে ভারত-রাশিয়ার মধ্যে নির্দিষ্ট ভাবে আফগানিস্তানের বিষয়ে কূটনৈতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভারত মনে করছে, রাশিয়ার মাধ্যমে তালিবানকে বার্তা দেওয়া সম্ভব। তালিবানের জমানায় যাতে হক্কানি নেটওয়ার্ক ও আইএসআইয়ের মদতেপুষ্ট লস্কর, জইশের মতো সংগঠনের ভারত-বিরোধী কার্যকলাপে মদত দেওয়া না হয়, সে বিষয়েও রাশিয়ার মাধ্যমে তালিবানকে বার্তা দিতে চায় দিল্লি। তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ এখন খুবই সামান্য। যেটুকু যোগাযোগ হয়েছে, তা ভারতীয়দের উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু ভারত চাইছে, তালিবান সরকারে যাতে পাখতুন ছাড়াও তাজিক, উজবেক, হাজিরার মতো সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব থাকে। তা বলে ভারতের পক্ষে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া কিছুটা সহজ হবে বলে কূটনীতিকদের মত।
নব্বইয়ের দশকে রাশিয়া, তাজিকিস্তান, তুরস্ক, ইরানের সঙ্গে ভারতও আফগানিস্তানে তালিবান বিরোধী নর্দার্ন অ্যালায়ান্সকে মদত দিয়েছিল। কিন্তু এখন আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পরে রাশিয়া তালিবান সম্পর্কে নরম সুর নিয়েছে। পুতিনের মতে, তালিবানকে মেনে নিয়েই অন্য দেশগুলিকে আফগানিস্তানের সঙ্গে কাজ করতে হবে। ভারতও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তালিবানের সমালোচনা করেনি।