দেশ জুড়ে বেড়েই চলেছে বেকারত্ব। প্রতিবাদ ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। এএফপি
এক দিকে বিরাট কোহালি, অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ-সলমন-আমির খান, চেতন ভগৎ। অন্য দিকে দেশের আমজনতা। সেলিব্রিটিরা যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছায় টুইটার ভরিয়ে দিচ্ছেন, আমজনতা সেই টুইটারে দাবি তুললেন— ‘চাকরি চাই। বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে অর্থনীতির উন্নতি চাই। চাই সীমান্তে নিরাপত্তা।’ কৃষক আত্মহত্যা ও শ্রমিকদের রোজগারের নিরাপত্তার দাবিতে দিনভর টুইট হয়েছে ওই সামাজিক মাধ্যমে। দিনের শেষে সংখ্যার বিচারে #হ্যাপিবার্থডেমোদী-কে বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে #ন্যাশনালআনপ্লয়মেন্টডে। গোটা প্রচেষ্টাটির উদ্যোক্তা কংগ্রেসের বক্তব্য— যুব সমাজ বিশ্বাস হারাচ্ছে এই সরকারের থেকে, তা স্পষ্ট।
আজ ছিল মোদীর ৭০তম জন্মদিন। অতীতে জন্মদিনের সন্ধ্যায় ঝটিকা সফরে মায়ের সান্নিধ্য পেতে আমদাবাদে উড়ে যেতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। করোনা-কালে সে ঝুঁকি নেননি প্রধানমন্ত্রী। আজ দুপুর থেকে সংসদে থাকলেও কোনও কক্ষেই যাননি। সংসদে তাঁর ঘরে দলের সাংসদেরা দলে দলে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ‘সেবা শপথ’ কর্মসূচি নিয়েছিলেন কর্মী-সমর্থকেরা। আগামী এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রক্তদান শিবির, সাফাই অভিযান, দুঃস্থদের খাবার খাওয়ানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। নেতার জন্মদিন উপলক্ষে ‘লর্ড অব দ্য রেকর্ডস’ বলে একটি বই প্রকাশ করেন সভাপতি জে পি নড্ডা। বলেন, ‘‘দলের প্রত্যেকে যাতে বইটি পান ও পড়েন সেই লক্ষ্য নিয়েছে দল।”
কিন্তু গোটা উদ্যাপনে আজ চোনা ফেলে দিয়েছে টুইটারের একটি ট্রেন্ড। #ন্যাশনালআনএমপ্লয়মেন্টডে নামে ওই হ্যাশট্যাগে আজ এত যুবক টুইট করে সরকারের সমালোচনা করেছেন, তাতে চিন্তায় বিজেপি-ও। করোনা-কালে নিট পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাত্র-সমাজের যে অসন্তোষ রয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ডিজ়লাইক-এর বহরে স্পষ্ট হয়েছিল। আজ তাঁর জন্মদিনেই এই অসন্তোষ চিন্তার বিষয় বলে মনে করছেন অনেকেই। সামনে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন। বিহারে সরকার ধরে রাখার লড়াইয়ে নামছে এনডিএ। ঘনিষ্ঠ মহলে বিজেপি নেতারাও স্বীকার করছেন, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। যদিও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি বিজেপি। দলের পক্ষ থেকে ওই হ্যাশট্যাগ প্রচার চালানোর জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করা হয়। পাল্টা জবাবে আজ কংগ্রেস কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘নিষ্ঠুর শাসকও জন্মদিনে উদার হয়। আর উনি জন্মদিনে কৃষিতে কালা কানুন আনলেন।’’
আরও পড়ুন: কৃষি-সংস্কারে আপত্তি, পদত্যাগ হরসিমরতের
জন্মদিনে অভিনন্দন এসেছে বিদেশ থেকেও। ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল ‘ডিয়ার নরেন্দ্র’-কে জার্মান ও ইংরেজি দু’ভাষাতেই অভিনন্দন জানান। অভিনন্দন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। সম্প্রতি নানা বিষয়ে বিবাদ চললেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তবে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে কোনও শুভেচ্ছা আসেনি বেজিং থেকে। নীরব ইসলামাবাদও।