প্রতীকী ছবি।
ভারত সরকারকে পণ্য বা পরিষেবা দেওয়ার দরপত্রের ক্ষেত্রে চিনের সংস্থাগুলির প্রবেশের পথ কার্যত গত কালই বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লি। অন্য দিকে ভারতকেই বিশ্বাসযোগ্য বাণিজ্য-বন্ধু হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাইছে তারা। আপাতত এই সাঁড়াশি আক্রমণেই বাণিজ্য-যুদ্ধে চিনকে চাপে রাখতে চায় দিল্লি।
গত কালই বিশ্বের দরবারে ভারতকে বাণিজ্য-বন্ধু করার ডাক দিয়েছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বাণিজ্যমন্ত্রীদের অনলাইন-বৈঠকে তাঁর আবেদন, বাণিজ্যে স্বচ্ছতা বাড়ুক। তা হোক পারস্পরিক বিশ্বাস বৃদ্ধির ভিত্তিতে। বিশ্বের জোগান-শৃঙ্খলে সেই সমস্ত দেশের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক, যারা বাণিজ্যের আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মানার প্রতি দায়বদ্ধ।
অনেকেরই ধারণা, এ ক্ষেত্রে নাম না-করেও আসলে চিনকে বিঁধেছেন গয়াল। আমেরিকা-সহ বহু দেশের অভিযোগ, চিন অন্য দেশের বাজার পণ্যে ছেয়ে দিলেও, নিজেদের বাজার ততখানি খোলে না। বাণিজ্যের তথ্যে তাদের স্বচ্ছতার অভাব যথেষ্ট। বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ, ভিন্ দেশের বাজার ধরার জন্য পণ্য তৈরির খরচের থেকেও কম দামে তা বিক্রি করে চিন (ডাম্পিং)। সম্প্রতি ভারত-মার্কিন বাণিজ্য পরিষদের সামনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বলেছেন, “সেই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য বাড়ুক, যাকে বিশ্বাস করা যায়।” সেই কারণেই প্রশ্ন উঠছে, চিন-মার্কিন সংঘাতের এই আবহে বিশ্ব বাণিজ্যের মঞ্চে চিনের তুলনায় কি নিজেকে বেশি বিশ্বস্ত বাণিজ্য-সহযোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে ভারত?
যদিও এখনই তা কতটা সম্ভব, তা খুব স্পষ্ট নয়। যেমন গয়াল বলেছেন, সস্তায় ওষুধ পেতে তা আমদানির পথ সুগম করুক সব দেশ। অর্থাৎ, ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য ওষুধের রফতানি-বাজার আরও বেশি করে খুলতে চান তিনি। কিন্তু ওই ওষুধ তৈরির কাঁচামালেরই ৭০% আসে চিন থেকে! এমন বহু নির্ভরতাই চট করে কাটা কঠিন বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।