রুশ অস্ত্রই এখনও ভারতীয় সেনার প্রধান নির্ভরতা। ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৯-এর গোড়ায় রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনা নিয়ে নয়াদিল্লির তৎপরতা দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, মস্কোর সঙ্গে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করলে ভারতকে ‘টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স’ (থাড) এবং পেট্রিয়ট-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী বিক্রি করবে ওয়াশিংটন। কিন্তু পত্রপাঠ সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সহজতর প্রযুক্তির পাশাপাশি ভারতের এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্তে অটল থাকার অন্যতম কারণ ছিল, কম দাম। সম্প্রতি আমেরিকার সহকারী বিদেশ সচিব ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের ভারত সফরের পর প্রকাশিত একটি রিপোর্টে পশ্চিমী অস্ত্রের প্রতি ভারতের ‘অনীহার কারণ’ হিসেবে একই যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়া থেকে অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম না-কেনার জন্য নয়াদিল্লির উপর ধারাবাহিক ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ‘বিকল্পের’ মূল্য চড়া হওয়ার কারণেই তা কার্যকর হচ্ছে না।
ভারতের তরফেও এই যুক্তি আমেরিকাকে জানানো হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ভারত-আমেরিকা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে বৈঠকের কথা। তার আগে জো বাইডেন সরকারের ওই রিপোর্টের কথা জানিয়ে এই দাবি করেছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। দামের পাশাপাশি, যৌথ উদ্যোগে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে আমেরিকার তুলনায় রাশিয়ার শর্ত অনেক সহজ বলেও বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
তবে ভিক্টোরিয়ার সাম্প্রতিক ভারত সফরে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইউক্রেনে আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে রাশিয়া থেকে সমরাস্ত্র না কেনার জন্য ভারতকে বার্তা দিয়েছেন আমেরিকার সহকারী বিদেশ সচিব।
এক সময় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার ৮০ শতাংশেরও বেশি অস্ত্র এবং সরঞ্জাম আসত রাশিয়া থেকে। পরবর্তী সময়ে আমেরিকা থেকে ভারী সামরিক পরিবহণ বিমান সি-১৭ গ্লোবমাস্টার এবং সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস কেনা হয়েছে। এসেছে এম-৭৭৭ হাউইৎজার। কিন্ত সামগ্রিক ভাবে এখনও ভারতে অস্ত্র সরবরাহের নিরিখে ওয়াশিংটনের তুলনায় মস্কোর পাল্লা অনেকটাই ভারী।