বৈদ্যুতিক সড়ক।
আর পেট্রল বা ডিজেলে নয়, দিল্লি থেকে রাজস্থানের জয়পুর যাওয়ার জন্য বৈদ্যুতিক রাস্তা বানাচ্ছে কেন্দ্র। প্রায় ২০০ কিলোমিটার এই রাস্তায় বিদ্যুতের সাহায্যেই ছুটবে গাড়ি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী এই ধরনের জাতীয় সড়কের কথা ঘোষণা করেছেন। এর দু’টি লক্ষ্য— প্রথমত, এই পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহণের খরচ কমবে। দ্বিতীয়ত, এর ফলে দূষণমুক্তও থাকবে পরিবেশ।
বৈদ্যুতিক জাতীয় সড়ক (ইলেকট্রিক হাইওয়ে) কী?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে যে রাস্তার উপর দিয়ে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলবে। বৈদ্যুতিন ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফ দেখেছেন নিশ্চয়ই। সেই প্যান্টোগ্রাফের মাধ্যমে বিদ্যুৎশক্তি এবং চলার গতি পায় ট্রেন। ঠিক তেমনই বৈদ্যুতিক জাতীয় সড়কের উপরে বৈদ্যুতিক তার থাকবে। বাহনে প্যান্টোগ্রাফের মতো ব্যবস্থা থাকবে। যার সাহায্যে ওই তার থেকে চলার শক্তি সংগ্রহ করবে বাহনগুলি। এ ছাড়াও সড়কের কিছু দূর অন্তর চার্জিং স্টেশন থাকবে। সেখানেও গাড়ি চার্জ দিয়ে নিতে পারবেন চালকরা।
২০০ কিলোমিটার এই রাস্তায় একটি লেন-ই শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক হবে। ওই লেন দিয়ে শুধু বৈদ্যুতিক গাড়িই চলবে। এই লেন দিয়ে বিশেষ করে বাস এবং ট্রাকই চলবে। পণ্য পরিবহণের খরচের কথা মাথায় রেখেই এই ধরনের রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গডকড়ী। তাঁর দাবি, এর ফলে ৭০ শতাংশ খরচ কমবে। ইতিমধ্যেই সুইডিশ সংস্থার সঙ্গে কথা শুরু হয়েছে এ বিষয়ে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কী ভাবে কাজ করবে এই বৈদ্যুতিক জাতীয় সড়ক?
গোটা বিশ্বে তিন ধরনের প্রযুক্তিতে এই সড়ক বানানো হয়েছে। সুইডেন যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতে সেই প্রযুক্তি ব্যবহারেরই কথা চলছে। সুইডেনে প্যান্টোগ্রাফ মডেল ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া কনডাকশন মডেলও ব্যবহার হয়। এই প্রযুক্তিতে রাস্তার নীচে বৈদ্যুতিক তার থাকে। গাড়ির নীচে লাগানো প্যান্টোগ্রাফের সঙ্গে ওই তারের সংযোগে শক্তি উৎপন্ন হয়। যা গাড়িকে চলতে সাহায্য করে। তৃতীয়টি হল ইনডাকশন মডেল। এই প্রযুক্তি তারবিহীন। ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বিদ্যুতের সাহায্যে গাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। সুইডেন এবং জার্মানিতে হাইব্রিড গাড়ি চলে। যেগুলি বিদ্যুতের পাশাপাশি পেট্রল-ডিজেলেও চলে।
সুইডেনেই প্রথম বৈদ্যুতিক রাস্তার ব্যবহার শুরু হয়। ২০১৬-তে পরীক্ষামূলক ভাবে বৈদ্যুতিন রাস্তার ব্যবহার শুরু করে সুইডেন। ২০১৮-তে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্যবহার শুরু হয়। সুইডেন ছাড়া জার্মানিতেও এই ধরনের রাস্তা আছে। এ বার ভারতেও এই উদ্যোগ নিল কেন্দ্র।