সিএএ-র বিরুদ্ধএ বিক্ষোভের কথা উঠেছে রিপোর্টে। ছবি: পিটিআই।
নাগরিক বা ধর্মীয় অধিকার খর্ব হচ্ছে বলে জোরালো আওয়াজ উঠেছে দেশের মধ্যেই। রাজ্যে রাজ্যে চলছে গণআন্দোলন। সেই পরিস্থিতির মধ্যেই, এ বার বিশ্ব গণতন্ত্র সূচকে ১০ ধাপ নেমে এল ভারত। ২০১৯ সালের তালিকায়, ১৬৭টি স্বাধীন দেশের মধ্যে ৫১তম স্থানে জায়গা হয়েছে ভারতের। ২০১৮তে ভারতের স্থান ছিল ৪১ নম্বরে। এই পতনের জন্য ভারতের নাগরিক অধিকার খর্ব হওয়াকেই দায়ী করছে ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইকনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)।
বিশ্বের কোন দেশের সরকার কতটা সক্রিয়, দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ, নাগরিক অধিকার কতটা সুরক্ষিত, রাজনৈতিক সংস্কৃতি কেমন, দেশের মানুষ রাজনীতির সঙ্গে কতটা যুক্ত, তা বিচার করে ২০০৬ সাল থেকে গণতন্ত্র সূচক প্রকাশ করে আসছে ইআইইউ। ২০১৯-এর হিসাবে তাতে ১০-এর মধ্যে ৬.৯ পেয়েছে ভারত। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে যা ছিল যথাক্রমে ৭.২৩ ও ৭.৮১। ২০১৪য় আবার ১০-এর মধ্যে ৭.৯১ পেয়েছিল ভারত।
এই পতনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভারত সরকারের সাম্প্রতিক বেশ কিছু সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছে ইআইইউ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, জম্মু-কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি। বলা হয়েছে, ৩৭০ ধারা বিলোপ করার আগে উপত্যকায় বিশাল বাহিনী নামায় ভারত সরকার। নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করে। স্থানীয় নেতা, যাঁরা কি না ভারতেই থাকার পক্ষে, তাঁদেরও গৃহবন্দি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
আরও পড়ুন: রত্নাকে নিয়ে ভোটপ্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ পার্থর, শোভনের জন্য বার্তা স্পষ্ট?
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) কথাও উঠে এসেছে ওই রিপোর্টে। বলা হয়েছে, সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ দেশের মুসলিমরা। প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বহু মানুষ। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাতেও এই ঘটনা ইন্ধন জুগিয়েছে বলে মনে করছে ইআইইউ।
প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রতিটি দেশের জন্য মোট চারটি বিভাগ তৈরি করেছে ইআইইউ। সেগুলি হল— পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, মিশ্র শাসন ব্যবস্থা এবং স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা। তাতে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র বিভাগে ঠাঁই হয়েছে ভারতের।
তবে তালিকায় ভারতের চেয়ে ঢের পিছিয়ে একদলীয় শাসনের দেশ চিন। ১০-এর মধ্যে মাত্র ২.২৬ পেয়ে ১৫৩তম স্থানে জায়গা হয়েছে তাদের। অন্য প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান রয়েছে ১০৮ নম্বরে, শ্রীলঙ্কা রয়েছে ৬৯-এ এবং বাংলাদেশ ৮০ নম্বরে।
আরও পড়ুন: জেএনইউ-র সার্ভার রুমে ভাঙচুরই হয়নি, আরটিআইয়ের উত্তরে চাঞ্চল্যকর তথ্য
গণতন্ত্র সূচক তালিকায় একেবারে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আইসল্যান্ড। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে সুইডেন ও নিউজিল্যান্ড। পঞ্চম স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড।
তালিকার প্রথম কুড়িতে জায়গা হয়নি আমেরিকার। তারা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বিভাগে ২৫তম স্থানে রয়েছে। জার্মানি এবং ব্রিটেন রয়েছে যথাক্রমে ১৩ এবং ১৪তম স্থানে। ২০তে রয়েছে ফ্রান্স। ১৩৫ নম্বরে রাশিয়া। উত্তর কোরিয়া রয়েছে সবার শেষে, অর্থাত্ ১৬৭ নম্বরে।