কোথাও যজ্ঞ, কোথাও নমাজ— চন্দ্রযানের সাফল্য কামনা দেশ জুড়ে। ছবি— পিটিআই।
সন্ধ্যা ৬টা ৪মিনিট। ভারতের দেড়শো কোটি জনসংখ্যার সম্মিলিত প্রতীক্ষা করছে সন্ধ্যার সেই মহার্ঘ প্রহরের জন্য। সেই সময়ই চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে চন্দ্রযান ৩। আর অধীর অপেক্ষায় থাকা দেশবাসী উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছেন। তর আর সইছে না।
চরকাকে রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত করা মহাত্মা গান্ধীর দেশের চন্দ্রযান স্পর্শ করতে চলেছে চরকাবুড়ির দেশের মাটি। মহার্ঘ সেই মুহূর্তের অপেক্ষায় কোটি কোটি দেশবাসী। সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে, বিজ্ঞানের অনবদ্য প্রয়োগ, চন্দ্রযানের চূড়ান্ত সাফল্যের কামনায় যাগযজ্ঞ, নমাজ, বিশেষ পুজো থেকে শুরু করে স্কুলে স্কুলে লাইভ অবতরণ দেখানোর প্রক্রিয়া। মহাকাশ বিজ্ঞানে ভারতের এমন রাজসিক পদচারণার প্রাক্মুহূর্তে তাই উত্তেজনা আর বাঁধ মানছে না।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সমাজমাধ্যমের নিজস্ব হ্যান্ডলে সমস্ত বিভেদ ভুলে দেশবাসীকে একসঙ্গে চন্দ্রযানের সাফল্য কামনার আবেদন জানিয়েছেন। ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীদের।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলে চন্দ্রযানের চন্দ্রাবতরণ সরাসরি দেখানো হবে। পড়ুয়ারা যাতে সাক্ষী থাকতে পারে এই অনবদ্য ঘটনার।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন, রাজ্যবাসীকে নিয়ে তিনিও চন্দ্রযানের চন্দ্রে অবতরণকে উদ্যাপন করবেন।
এ তো গেল রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের কথা। সাধারণ মানুষের মধ্যে উন্মাদনা যেন আরও কয়েক পর্দা বেশি। অজমের শরিফের পাশাপাশি লখনউয়ে ইসলামিক সেন্টার অফ ইন্ডিয়ায় আয়োজন করা হয়েছিল বিশেষ নমাজের। সেখানে বহু মানুষ চন্দ্রযানের সাফল্য কামনা করেন।
মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে বিশেষ ভস্ম আরতির আয়োজন করা হয়েছিল।
উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশের পরমার্থ নিকেতন ঘাটে জাতীয় পতাকা হাতে গঙ্গা আরতিতে অংশ নেন বহু সাধারণ মানুষ।
অভিনেতা অনুপম খেরও সমান উত্তেজিত। নিজের সমাজমাধ্যমের হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন সে কথা। জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যা ঠিক ৬টা বেজে ৪মিনিটে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে চন্দ্রযানের ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’ উপভোগ করবেন তিনি।
বাংলার বিভিন্ন জায়গাতেও চন্দ্রযানের অবতরণ ঘিরে উন্মাদনা ভরপুর। আসানসোলে চন্দ্র অভিযানে ভারতের বৈজ্ঞানিক গবেষণার সাফল্য কামনায় মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে মণ্ডপ বেঁধে মন্দিরের সামনে হোমযজ্ঞ অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চাঁদের মাটিতে ভারতের চন্দ্রযানের পা দেওয়া ঘিরে উন্মাদনায় টগবগ করে ফুটছে দেশ।