ইমরান খান এবং ফাওয়াদ চৌধুরী— ফাইল চিত্র।
পার্লামেন্টে বক্তৃতায় ইমরান খান সরকারের ‘সাফল্য’ ফাঁস করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে বিড়ম্বনায় ফেললেন মন্ত্রী ফাওয়াদ আহমেদ চৌধুরী। পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করেই শুক্রবার ফাওয়াদ তাঁর পুলওয়ামা মন্তব্যের নয়া ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলওয়ামায় গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি হানার কথা আমি বলতে চাইনি। ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বায়ুসেনার হামলার (বালাকোটে) পরে পাক বিমানবাহিনীর সফল প্রত্যাঘাতকেই ইমরান সরকারের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছি।’’
অন্যদিকে, বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ এ দিন জানান, পাক মন্ত্রী সরাসরি পুলওয়ামা সন্ত্রাসে মদতের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির তরফে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস-বিরোধী আর্থিক নজরদারি সংস্থা ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)-এর কাছে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করার দাবি জানানো হবে।
বৃহস্পতিবার পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’তে সে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ফাওয়াদ বলেন, ‘‘আমরা ভারতে (হিন্দুস্তান) ঢুকে মেরেছি। পুলওয়ামায় আমাদের ওই সাফল্য, ইমরান খানের আমলে গোটা দেশের সাফল্য। আমরা সকলেই তার শরিক।’’ সরকার পক্ষের প্রশংসা করতে গিয়ে পাক মন্ত্রী সরাসরি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হামলায় মদতের কথা স্বীকার করায় প্রশ্ন তোলে পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশও।
আরও পড়ুন: ‘পুলওয়ামা হামলা ইমরানের সাফল্য’, পার্লামেন্টে দাবি পাক মন্ত্রীর
এই পরিস্থিতিতে এ দিন ভি কে সিংহ সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, ‘‘পুলওয়ামা সন্ত্রাসে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নেওয়ায় পাক মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রমাণিত হল, বালাকোটের জঙ্গি শিবিরে বিমানহানার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। আমাদের সরকার পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য এফএটিএফ-এর দ্বারস্থ হবে।’’
আরও পড়ুন: কাশ্মীরের কুলগামে বিজেপির ৩ যুব নেতাকে গুলি করে মারল জঙ্গিরা
প্রসঙ্গত, পুলওয়ামা সন্ত্রাসে জড়িত জইশ-ই-মহম্মদ-সহ কয়েকটি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনকে আর্থিক সাহায্য করার অভিযোগ পাকিস্তানকে ‘সন্দেহভাজন রাষ্ট্র’ চিহ্নিত করে ‘ধূসর তালিকায়’ রেখেছে এফএটিএফ। গত বছর এফএটিএফের প্লেনারি বৈঠকে বলা হয়, জঙ্গিদের আর্থিক মদত আটকাতে প্রয়োজনীয় ২৭টি পদক্ষেপের মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে সাড়া দিয়েছে পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে ফাওয়াদের মন্তব্যের জেরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসলামাবাদ বিপাকে পড়তে পারে বলে কূটনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।