ডোকা লা-তে আরও সেনা মোতায়েন করছে ভারত।—ফাইল চিত্র।
সিকিমের ডোকা লা-এ চিন সীমান্তে দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ উত্তরোত্তর চড়ছে। এলাকায় চিনা সেনাবাহিনী আরও সেনা মোতায়েন করার পর এ বার ভারতীয় সেনাবাহিনীও ডোকা লা-এ তার শক্তি বাড়াল।
বন্দুক তাক করা নয় কারও দিকে। কিন্তু নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিমে ভারত-চিন সীমান্তের ডোকা লা-এ আরও সেনা জওয়ান মোতায়েন করল ভারতীয় সেনাবাহিনী। দিনকয়েক আগে এখানে ভারতীয় জওয়ানদের দু’টি বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দিয়েছিল চিনের সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। হুমকি দিয়েছিল ‘আগ্রাসী হামলা’র। ’৬২-র পর দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সীমান্তে এত দিন ধরে উত্তেজনা বজায় রয়েছে এই প্রথম। এর আগে, ২০১৩ সালে জম্মু-কাশ্মীরের লাদাখে দৌলত বেগ ওল্ডিতে দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা ছিল টানা ২১ দিন ধরে।
আরও পড়ুন- সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রটি জানিয়েছেন, ২০১২ সালে ডোকা লা-র লালতেনে ভারতীয় সেনাবাহিনী ওই দু’টি বাঙ্কার বানিয়েছিল, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে। ভারত-ভূটান-তিব্বত সীমান্তের এক কোণে থাকা ছাম্বি উপত্যকার খুব কাছে রয়েছে, এই যুক্তিতে পিএলএ ১ জুন ওই বাঙ্কার দু’টি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীকে। কিন্তু দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে, ভূটান-চিন সীমান্তে পাহারা বাড়ানোর পাশাপাশি লালতেনে ওই দু’টি বাঙ্কার বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ২০১২ সালে যা বানানো হয়। ওই বাঙ্কার দু’টিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া না হলে যে পিএলএ ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে, তা ওই এলাকায় মোতায়েন সেনাবাহিনীর তরফে উত্তরবঙ্গের সুকনায় ৩৩ কর্পস-এর সদর দফতরকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার পর খুব তড়িঘড়ি ৬ জুন রাতেই বুলডোজার দিয়ে চিনা সেনাবাহিনী ওই দু’টি বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দেয়। যুক্তি দেখায়, ওটা একেবারেই চিনের এলাকা। ওখানে ভারত বা ভূটানের কোনও অধিকার নেই। কিন্তু চিনা বুলডোজার যাতে ওই দু’টি বাঙ্কারের আরও ক্ষতি না করে, সে জন্য এলাকায় মোতায়েন ভারতীয় সেনা জওয়ানরা চিনা সেনাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। বরং ৮ জুন রাতে কিছুটা হাতাহাতিও হয় লালতেনে, পিএলএ ও ভারতীয় সেনা জওয়ানদের মধ্যে। এর পরেই ১৪১ ডিভিশন থেকে ওই এলাকায় আরও জওয়ান নিয়ে আসে পিএলএ। তারই প্রেক্ষিতে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে, ডোকা লা-র লালতেনে আরও সেনা জওয়ান মোতায়েন করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।