লিম্পিয়াধুরায় ব্রিজ তৈরির সময় থেকেই ভারত-নেপাল বিতর্কের সূত্রপাত।
ভারতের অংশ জুড়ে নতুন ম্যাপ প্রকাশ করেছে নেপাল সরকার। ভারত তার প্রতিবাদ করলেও ওই ঘটনার পর সরকারি ভাবে কাঠমান্ডুর সঙ্গে নয়াদিল্লির দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়নি। এ বার সেই পথ খুলছে শীঘ্রই। শুরু হচ্ছে বিদেশমন্ত্রক পর্যায়ের বৈঠক। আগামী ১৭ অগস্ট নেপালের বিদেশসচিব এবং কাঠমান্ডুতে ভারতের রাষ্ট্রদূত বৈঠকে বসছেন। উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে আলোচনার জন্য রুটিন বৈঠক হলেও, দুই কূটনীতিকের বৈঠকে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে বলে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর।
এই বৈঠক যদিও রুটিন প্রক্রিয়া। ২০১৬ সাল থেকে ‘ওভারসাইট মেকানিজম’ নামে দু’দেশের মধ্যে নিয়মিত ব্যবধানে এই বৈঠক হয়। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা হয়। কিন্তু ভারতের অংশ জুড়ে নেপাল নয়া মানচিত্র প্রকাশ করার পর এই বৈঠকের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। পাল্টে গিয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের রসায়নও। এ বারের বৈঠকে অবধারিত ভাবেই সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে বলে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে জানানো হয়েছে।
যদিও ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক সরকারি ভাবে রুটিন আলোচনার কথাই জানিয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘১৭ অগস্ট কাঠমান্ডুতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিনয় কাওয়াট্টা এবং নেপালের বিদেশসচিব শঙ্কর দাস বৈরাগির মধ্যে ১৭ অগস্টের বৈঠক নয়াদিল্লি-কাঠমান্ডু নিয়মিত আলোচনার অংশ।’’ নেপালও জানিয়েছে, দু’পক্ষই ১৭ অগস্ট বৈঠকে সম্মত হয়েছে। এই বৈঠকেই ঠিক হবে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে পরবর্তী বৈঠক কবে হবে।
আরও পড়ুন: ‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’, দেশের জিডিপি নিয়ে মোদীকে নিশানা রাহুলের
জুন মাসেই ভারতের লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরাকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে ওই তিনটি এলাকাকে জুড়ে নতুন ম্যাপ প্রকাশ করেছে নেপাল। নেপালের সংসদের নিম্ন ও উচ্চ উভয়কক্ষেই সেই সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর সরকারি ভাবে সেই ম্যাপ প্রকাশ করেছে কেপি শর্মা ওলি সরকার। তার পর থেকেই দু’দেশের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। ওই সময় ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘কৃত্রিম ভাবে বর্ধিত ভূখণ্ডের এই দাবি (নেপালের) অন্যায্য। এটা দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে চলমান পারস্পারিক আলোচনা ও বোঝাপড়ার পরিপন্থী।’’
আরও পড়ুন: এখনও সঙ্কটজনক, প্রণবের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি
কিন্তু নেপালের এই মানচিত্র পরিবর্তনের পর থেকেই ভারতের তরফে বিদেশমন্ত্রক পর্যায়ের বৈঠকের জন্য দৌত্য শুরু হয়। সেই প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায়ে সফল হয়েছে নয়াদিল্লি। ১৭ অগস্টের আলোচনায় দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণও ঠিক হতে পারে বলেই কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।