নিম্নমানের কাশির সিরাপই গাম্বিয়ায় শিশুমৃত্যুর কারণ। প্রতীকী ছবি।
ভারতে তৈরি নিম্নমানের কাশির সিরাপই গাম্বিয়ায় শিশুমৃত্যুর কারণ— আমেরিকার শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা, সেন্টারস ফর ডিজিজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যৌথ তদন্তে এই তথ্য সামনে উঠে এল।
গত অক্টোবর মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) সতর্কতা জারি করে বলেছিল, হরিয়ানার সোনিপতের সংস্থা মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস গাম্বিয়ায় যে চার ধরনের কাশির সিরাপ সরবরাহ করেছিল, তা নিম্নমানের এবং সে দেশের ৬৬টি শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে এর যোগ রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। গতকাল প্রকাশিত সিডিসি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে— ‘‘তদন্ত করে দেখা গিয়েছে গাম্বিয়ায় যে সিরাপ সরবরাহ করা হয়েছিল, তাতে ডাইইথিনিল গ্লাইকোল (ডিইজি) বা ইথিলিন গ্লাইকোল (ইজি)-এর বিষক্রিয়া হয়েছে, যার ফলে অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি (একেআই)-তে আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা।’’
সিডিসি-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আক্রান্ত শিশুদের বিভিন্ন উপসর্গ এবং মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের ভিতরে তৈরি ওষুধের মান নিয়ে যতটা কড়াকড়ি, বিদেশ থেকে আনা ওষুধের ক্ষেত্রে নিয়মকানুন ততটা কড়া নয়। আর গরিব দেশগুলির ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আমদানি করা ওষুধের মান বিচার করার জন্য কর্মী ও অর্থের প্রবল সঙ্কট রয়েছে।
তবে আমেরিকা ও গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যৌথ রিপোর্টে কাশির সিরাপের নিম্নমানের কথা তুলে ধরা হলেও গত ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পওয়ার বলেছিলেন, পরীক্ষার পর দেখা গিয়েছে, ওই সংস্থার কাশির সিরাপ উপযুক্ত মানের। কাশির সিরাপে ডাইইথিনিল গ্লাইকোল বা ইথিলিন গ্লাইকোল-এর অস্তিত্ব মেলেনি বলেই দাবি করেছিলেন তিনি।
ভারত থেকে পাঠানো কাশির সিরাপকে গাম্বিয়ার শিশুমৃত্যুর কারণ হিসেবে তুলে ধরে সিডিসি-র রিপোর্ট যখন সামনে এসেছে, সেই সময়েই মহারাষ্ট্রের কাশির সিরাপ প্রস্তুতকারক ছয়টি সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বলে বিধানসভায় জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে শুধু গাম্বিয়ায় নয়, গত বছর উত্তরপ্রদেশের একটি সংস্থার তৈরি কাশির সিরাপ খেয়ে উজ়বেকিস্তানের ১৮টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। নয়ডার পুলিশ আজ জানিয়েছে, ওই সংস্থার তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে তারা।