PM Modi

India-Russia: নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রুশ তেল, অস্ত্র এবং বাণিজ্যে নজর দিল্লির

বিদেশ সচিব এ কথাও আজ স্পষ্ট করে দিলেন যে, রাশিয়ার থেকে ভারতের তেল আমদানি খুব কম। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা বাড়তেও পরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

মস্কোর উপরে পশ্চিমী দুনিয়ার আর্থিক নিষেধাজ্ঞার জেরে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নয়াদিল্লির চেষ্টা, কী ভাবে সেই দেশের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে এর মধ্যেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। সোমবার বণিকসভা ভারত চেম্বার অব কমার্সের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভিডিয়ো-বক্তৃতায় এ কথা জানালেন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তাঁর বক্তব্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে তেলের দর বেড়ে গিয়েছে। ভুগতে হচ্ছে ভারতকেও।

বণিকসভায় বিদেশ সচিবের বক্তৃতার বিষয় ছিল, অতিমারির পরে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির মেরামতি। কিন্তু নিজের বক্তব্যে এবং প্রশ্নোত্তরে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, তেলের দামের পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতি, বিশ্বে জ্বালানির মজুত ভান্ডার, মোদীর আত্মনির্ভর ভারতের নীতি, প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের বিভিন্ন দিক, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের দাবিও অকপট ভাবে তুলে ধরেছেন শ্রিংলা।

Advertisement

রাশিয়া-ইউক্রেন প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “এই সঙ্কট আমাদের তৈরি করা নয়, অথচ আমাদের ভুগতে হচ্ছে। এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে রাশিয়ার উপরে পশ্চিমের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কারণে। এতে আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ ওই দেশের সঙ্গে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বিষয়ে আমাদের সংযোগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এখন দেখতে হবে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।”

পাশাপাশি বিদেশ সচিব এ কথাও আজ স্পষ্ট করে দিলেন যে, রাশিয়ার থেকে ভারতের তেল আমদানি খুব কম। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা বাড়তেও পরে। শ্রিংলার কথায়, “আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতেও মূল্যস্ফীতি মাথা চাড়া দিচ্ছে। আমাদের সমস্যা হল, আমরা জ্বালানির ৭৫ শতাংশ আমদানি করি। ফলে জ্বালানির দাম বাড়লে, সব কিছুর দাম বাড়বে। ভারত এখন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছে, যাতে তারা তাদের মজুত জ্বালানির ভান্ডার খুলে দেয়।”

Advertisement

বিদেশ সচিবের বক্তব্য, ভারত নিজেদের প্রয়োজনের মাত্র ২ শতাংশ জ্বালানি আমদানি করে রাশিয়া থেকে। তবে প্রয়োজনে আমদানি বাড়ালে, আর্থিক হাল ধরা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। সম্প্রতি রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভ্রভ ভারত সফরে এসে জানিয়ে গিয়েছেন, কম দামে ভারতকে অশোধিত তেল বিক্রিতে তাঁরা প্রস্তুত। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, যুদ্ধের বাজারে দেশের জ্বালানি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ধরে রাখতে এই সুযোগ না নেওয়ার কারণে নেই।

রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কার নিয়ে বিদেশ সচিবের বক্তব্য, “রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তৈরি হয়েছিল এই পরিষদ এবং যুদ্ধের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তেরা ছিলেন এর স্থায়ী সদস্য। কিন্তু তার ৭৫ বছর পার হয়ে গিয়েছে। সংস্কার না করলে পরিষদের কোনও সিদ্ধান্তের কোনও মানে দাঁড়াচ্ছে না।” সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন শ্রিংলা। তাঁর বক্তব্য, পরিষদ শান্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা নিতে পারল না বলে গোটা বিষয়টিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে টেনে আনতে হল।

অতিমারির ফলে বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিবেশীকে অগ্রাধিকার নীতির কথা উল্লেখ করেছেন বিদেশ সচিব। তাঁর কথায়, আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য পরিকাঠামো তৈরি করা, প্রতিবেশীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে মোদী সরকার। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এবং নেপাল যে আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে সে কথাও বিশদে উল্লেখ করেন তিনি। শ্রিংলার কথায়, “বাংলাদেশ এখন রফতানির প্রশ্নে সেরা ১০টি দেশের মধ্যে চলে
এসেছে। তারা এখন পঞ্চম স্থানে। আমরা তাদের সঙ্গে সামগ্রিক অর্থনৈতিক চুক্তির কথা আলোচনা করছি। বণিকসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই সপ্তাহে বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী আসবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement