পাকিস্তানের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ভারত। ছবি: রয়টার্স।
প্রধানমন্ত্রীর ভিভিআইপি বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি পাকিস্তান। তা নিয়ে এ বার আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমান চলাচল সংগঠন (আইসিএও)-র দ্বারস্থ হল ভারত সরকার। আন্তর্জাতিক উড়ান নীতি অনুযায়ী, কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি-সহ ভিভিআইপি ব্যক্তিদের বিশেষ বিমানের ক্ষেত্রে পরস্পরের আকাশসীমা ব্যবহারে বাধা নেই। কিন্তু পাকিস্তান বার বার এই নিয়ম লঙ্ঘন করায় তাদের বিরুদ্ধে আইসিএও-তে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে দিল্লি সূত্রে খবর।
এর আগে, ২০ সেপ্টেম্বর মার্কিন সফরে যাওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদীর বিমানকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়নি পাকিস্তান। ইউরোপ সফরে যাওয়ার আগে তাদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি পাননি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও। তাই বিষয়টি নিয়ে আইসিএও-তে যাওয়া ছাড়া গতি ছিল না বলে দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে। বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনেই একে অপরের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়। সেই অনুরোধ গৃহীতও হয়। আগামী দিনেও এই ধরনের অনুরোধ জানাবে ভারত। কিন্তু বার বার কেন আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করছে, তার সদুত্তর দেয়নি পাকিস্তান। তাই আলাদা ভাবে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
ঠিক কী কারণে নরেন্দ্র মোদীর বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি, এখনও পর্যন্ত তা খোলসা করেনি ইসলামাবাদ। তবে বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি নিজে এ ঘোষণা করেছেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে। ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়াকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে শাহ মেহমুদ কুরেশিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রেডিয়ো পাকিস্তান।
আরও পড়ুন: ‘যত খুশি সন্তানের জন্ম দিন’, বদরুদ্দিনের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক
আরও পড়ুন: ‘মনে হল যেন সিনেমা দেখছি’, বাগদাদির বিরুদ্ধে অভিযানের লাইভ দেখে বললেন ট্রাম্প
এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামা হামলার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালাকোটে ঢুকে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় বায়ুসেনা। তার পরই দীর্ঘদিনের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ রাখার সীদ্ধান্ত নেয় ইমরান খানের সরকার। ২৭ মার্চ আকাশসীমা খুলে দিলেও দিল্লি, ব্যাঙ্কক এবং কুয়ালালামপুর যাওয়ার সমস্ত বিমানের উড়ান বন্ধ রাখা হয়। তার পর ১৫ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত ফের ভারতের আকাশসীমা বন্ধ রাখে পাকিস্তান, যাতে তাদের আকাশসীমার উপর দিয়ে কোনও বিমান ভারতে ঢুকতে না পারে। জুন মাসে সাংহাই সম্মেলনের জন্য নরেন্দ্র মোদীর বিমানকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করে বিশকেক যাওয়ার অনুমতি দেয় তারা। তার পর গত ১৬ জুলাই নিজেদের সম্পূর্ণ ভাবে আকাশসীমা খুলে দেয়। কিন্তু ৫ অগস্ট নরেন্দ্র মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করলে নতুন করে সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি দেখা দেয় দুই দেশের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টাও চালান ইমরান খান। যদিও তাতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। তার পরই মোদীর বিমানকে নিজেদের আকাশসীমায় ঢুকতে দিতে অস্বীকার করল তারা।