ছবি: সংগৃহীত
সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের পরেই লকডাউনের ধাক্কা সামলানোর আর্থিক দাওয়াই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ওই বৈঠকে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হবে, না কি ৩ মে-র পরে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর তার প্রেক্ষিতেই ছোট-মাঝারি শিল্প থেকে রুটিরুজি হারানো শ্রমিকদের সুরাহা দিতে আর্থিক প্যাকেজ চূড়ান্ত করতে চাইছে।
আজ ছোট-মাঝারি শিল্পমন্ত্রী নিতিন গড়কড়ী জানান, তিনি ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার একটি তহবিল তৈরির প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছেন। আজ বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের কর্তারা নিতিনের সঙ্গে বৈঠকে ছোট-মাঝারি শিল্পের নগদ টাকার সমস্যার কথা জানান। নিতিন জানান, এই তহবিল থেকে ছোট-মাঝারি শিল্পের বকেয়াও মিটিয়ে দেওয়া হবে। যাতে নগদের অভাবে লকডাউন পর্ব ও তার পরবর্তী সময়ে ছোট-মাঝারি শিল্পগুলির কাজ চালাতে সমস্যা না হয়। ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছোট-মাঝারি শিল্পগুলির পক্ষে শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকরাও সমস্যায় পড়েছেন। আজ নিতিন জানিয়েছেন, শ্রমিকদের ইএসআই তহবিলে পড়ে থাকা ৮০ হাজার কোটি টাকা থেকে ছোট-মাঝারি শিল্পকে সাহায্য করা যেতে পারে। যাতে তাদের এপ্রিল ও পরের মাসে বেতন দিতে সমস্যা না হয়। শ্রম মন্ত্রকের কাছে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তিনি।
সরকারি সূত্রের যুক্তি, লকডাউনের পরেই গরিব মানুষকে সুরাহা দিতে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার পরে দ্বিতীয় আর্থিক প্যাকেজ মূলত ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্যই তৈরি হবে। আজ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদও ছোট-মাঝারি শিল্পকে সাহায্যের কথা বলেছে। কিন্তু তার আগে রাজ্যগুলি কী চাইছে, তা-ও বুঝে নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই তিনি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা আগেই কেন্দ্রের কাছে আরও বেশি আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেকেই রাজ্যের রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ শিথিল করার দাবি তুলেছেন।
আজ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিংহ জানান, করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে সুপারিশ বদলের দরকার কি না, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতের জন্য সুপারিশ বদলাতে হতে পারে। রাজ্যগুলি ঘাটতি বাড়িয়ে বাজার থেকে বেশি ঋণ নিতে চাইছে। কিন্তু রাজ্যগুলিকে শুধু আরও ধারের কথা ভাবলে চলবে না, বাজারে সরকারি বন্ডের চাহিদা রয়েছে কি না, তা-ও দেখতে হবে। তাঁর বক্তব্য, জানুয়ারি-মার্চ ও এপ্রিল-জুনের আর্থিক বৃদ্ধির হার দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।