India Lockdown

কোনও ক্ষোভ নেই লকডাউনে, শুনে নিলেন প্রধানমন্ত্রী

পঞ্চায়েতরাজ দিবস উপলক্ষে আজ বিভিন্ন প্রান্তের পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩২
Share:

নরেন্দ্র মোদী।

লকডাউনের সিদ্ধান্ত যথাযথ এবং এ নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনও ক্ষোভ নেই— দেশবাসীর মুখ দিয়েই আজ কথাগুলি বলিয়ে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘরবন্দি দেশ টিভির পর্দায় দেখল তা।

Advertisement

পঞ্চায়েতরাজ দিবস উপলক্ষে আজ বিভিন্ন প্রান্তের পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাঁরই ছুড়ে দেওয়া প্রশ্ন লুফে নিয়ে লকডাউনের সিদ্ধান্তে সিলমোহর লাগালেন ওই পঞ্চায়েত প্রধানেরা। জানালেন, দেশের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে যথাযথ মনে করছেন তাঁরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মকে গ্রামের মানুষ আপন করে নিয়েছেন দুই গজ দূরত্বের (দো গজ কি দূরি) সহজ-সরল মন্ত্রে। মোদী পাঠ দিয়েছেন আরএসএস-র স্বদেশিয়ানারও। জানিয়েছেন, করোনা অতিমারির সবচেয়ে বড় শিক্ষা, বাইরের দিকে না-তাকিয়ে, স্বনির্ভর হওয়া। জম্মু-কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, বিহার, অসম, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত প্রধানেরা ছিলেন এই বৈঠকে।

প্রধানমন্ত্রী শুরু করেন জম্মু-কাশ্মীরকে দিয়ে। বারামুলা জেলার এক গ্রামের সরপঞ্চ মহম্মদ ইকবালকে অবশ্য মানুষের অসন্তোষ সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন করেননি মোদী। তবে তার পরেই মহারাষ্ট্রের এক গ্রামপ্রধানকে মোদী বলেন, “আপনাদের গ্রাম নিশ্চয়ই লকডাউনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে! গোটা দেশ বন্ধ করে রেখে দিয়েছেন বলে মোদীর উপর সকলে রাগ করছেন?” প্রিয়ঙ্কা নামে ওই পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “গ্রামের মানুষ এখন ভাল করেই বুঝতে পেরেছেন, প্রধানমন্ত্রী যা করছেন, তা দেশের মানুষকে সুস্থ রাখতে। তাদের ভালর জন্যই।” প্রধানমন্ত্রী এর পরে অসমের কাছাড়ের এক পঞ্চায়েত প্রধানকেও একই প্রশ্ন করেন। ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। বলেন, “অসমে বিহু আসছে। এত বড় উৎসব। নিশ্চয়ই রাজ্যের মানুষ ক্ষুব্ধ যে, মোদীজী এই সময়ে লকডাউন করে রেখে দিলেন!” চটজলদি জবাব আসে, “লকডাউন ছাড়া যে কোনও রাস্তা নেই, অসমের মানুষের কাছে তা স্পষ্ট।” উত্তরপ্রদেশের বস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিজে থেকেই জানান, তাঁর গ্রামের মানুষ অত্যন্ত খুশি। কারণ ঘরবন্দি অবস্থাতেই নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছেন তাঁরা। মোদী যোগ করেন, “গ্রামের মানুষ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের পথে হাঁটছে। কারণ, নিজেদের প্রতি এবং সরকারের উপরেও আস্থা রয়েছে তাঁদের।” ‘দো গজ কি দূরি’-র প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে মোদীর ব্যাখ্যা, “এ এক বিচিত্র ভাইরাস। নিজে থেকে কোথাও যায় না। যদি আপনি ডেকে নিয়ে আসেন, তা হলে আপনার সঙ্গে আসবে। আপনার বাড়িতে ঢুকবে। বাড়ির কাউকে ছাড়বে না।”

Advertisement

আরও পড়ুন: বালিকাকে খাটানো হচ্ছিল লঙ্কাখেতে

লকডাউনের মধ্যে এক-এক দিন এক-এক রাজ্যের ও রঙের গামছা মুখে বাঁধতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। বাতি জ্বালানোর দিন ছিল মণিপুরি, তার পরের দিন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে পরেছিলেন অসমের গামোসা। আজ পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকেও নাকে বেঁধেছিলেন সাদার উপর সবুজ নকশা করা উত্তর-পূর্বাঞ্চলেরই গামছা। প্রধানদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, “মুখ ঢাকা রাখাটা সব সময়ই জরুরি। সব সময় যে দামি মাস্ক পরতে হবে, তা নয়। (নিজের মুখের গামছাটি দেখিয়ে) এই রকম হলেও চলবে।” এই সূত্রে স্বনির্ভরতার বিষয়টি বিশদে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “প্রত্যেকটি অতিমারি নতুন সঙ্কট তৈরি করেছে, কিন্তু সেই সঙ্গে জোরালো বার্তাও দিয়েছে— প্রতিটি গ্রামকে স্বনির্ভর হতে হবে, যাতে নিজেদের প্রয়োজন নিজেরাই মেটানো যায়। দেশের বাইরে সমাধান না-খুঁজে আত্মনির্ভর হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে করোনা।”

আরও পড়ুন: রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে ছোট শিল্পকে প্যাকেজ

পরে প্রধানমন্ত্রী টুইট করেন, “পঞ্চায়েতের প্রধানদের সঙ্গে আজ খুবই অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে নিজেদের রণকৌশলের কথা জানিয়েছেন তাঁরা। এই সঙ্কটের সময়ে কঠিন পরিশ্রমের জন্য তাঁদের সকলকে সেলাম জানাই।” প্রধানমন্ত্রী এ দিনের অনুষ্ঠানে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উন্নততর পরিচালনায় ও তথ্য জোগাতে ‘ই-গ্রামস্বরাজ অ্যাপ’ এবং গ্রামীণ ভারতের জমি-সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত ‘স্বামীত্ব যোজনা’-র উদ্বোধন করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement