India Lockdown

সংক্রমণ মুক্ত এলাকায় শর্তসাপেক্ষে অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরুর প্রতিশ্রুতি কেন্দ্রের

আগামী এক সপ্তাহের মূল্যায়ন শেষে যে সব এলাকা নিজেকে করোনা সংক্রমণ-শূন্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে, তারাই ছাড় পাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৫
Share:

ছবি পিটিআই।

আগামী ২০ এপ্রিল থেকে কোন কোন এলাকায় অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু হবে, তার মূল্যায়নে হাত দিল কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

করোনা মোকাবিলায় গত কাল দ্বিতীয় পর্বের লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা চলবে ৩ মে পর্যন্ত। তবে তারই মধ্যে দেশের যে সব অংশ সংক্রমণ-মুক্ত, সেখানে শর্তসাপেক্ষে অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু করতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। আজ কেন্দ্র জানিয়েছে, নিরন্তর আলোচনা, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে কোথায় ছাড় দেওয়া যাবে, সেই বিষয়ে একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই ছাড়ের মাধ্যমে মূলত গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা হয়েছে।

আজ সরকার জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মূল্যায়ন শেষে যে সব এলাকা নিজেকে করোনা সংক্রমণ-শূন্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে, তারাই ছাড় পাবে। কেন্দ্রের মতে অনেক রাজ্যই লকডাউন কড়া ভাবে মানছে না। তাই কার্যত প্রতিযোগিতার মনোভাব এনে যারা লকডাউন মেনে চলেছে, তাদের ছাড় দিয়ে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আজ সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিবদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা জানিয়েছেন, একমাত্র সংক্রমণহীন এলাকাতেই আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু হবে। কাজকর্ম চালু হওয়ার পরে কোনও গ্রিন জ়োনে নতুন সংক্রমণের খবর এলে তৎক্ষণাৎ ফের লকডাউন ঘোষণা করতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: লকডাউনে কোথায় ছাড়, কোথায় নয়, দেখে নিন

গত তিন সপ্তাহের লকডাউনে দেশের অর্থনীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। বিশেষত গ্রামে। আজ সরকারি নির্দেশিকায় গ্রামে জলসেচ ও জল সংরক্ষণে জোর দিয়ে একশো দিনের কাজ চালু করার কথা বলা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় কাজ সৃষ্টি ও মানুষের হাতে নগদ জোগানের লক্ষ্যেই ওই সিদ্ধান্ত। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে যেখানে কলকারখানা, খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং, নির্মাণ ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শিল্প আছে, সেখানে পারস্পরিক দূরত্ব মেনে কাজকর্ম শুরু করা যেতে পারে।

সরকারের আশা, এর ফলে গ্রামগুলিতে আটকে পড়া শ্রমিকদের সামনে কাজের সুযোগ তৈরি হবে। গ্রামীণ এলাকার ওষুধ ও মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী সংস্থা ছাড়াও ছাড় পাবে পুর এলাকার বাইরে থাকা এসইজেড, রফতানিমূলক ক্ষেত্র, শিল্পতালুক, শিল্পনগরীর সব কারখানা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক ভাবে যে ক্ষেত্রগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে তাতে কাজ শুরু হলে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা কম এবং এতে সামান্য হলেও গতি পাবে থমকে থাকা অর্থনীতি। শহরে আটকে পড়া শ্রমিকদের কথা ভেবে আবাসন ও নির্মাণ শিল্পে কাজ শুরু করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। ছাড় দেওয়া এলাকায় পারস্পরিক দূরত্বের নিয়ম মেনে বিদ্যুৎমিস্ত্রি, প্লাম্বার, গাড়ি সারানোর কর্মীরা কাজ শুরু করতে পারবেন। তবে নিয়ম না-মানলে বা ২০ এপ্রিলের পরে সংক্রমণের নতুন খবর এলে আর্থিক কর্মকাণ্ড বাতিল করার ক্ষমতা স্থানীয় প্রশাসনের থাকবে।

আরও পড়ুন: কলকাতা-সহ ৬ মহানগরই করোনার হটস্পট, চিহ্নিত সারা দেশের ১৭০ জেলা

কৃষি ও মৎস্যচাষ, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাহে আগেই ছাড় দিয়েছিল কেন্দ্র। আজ রাবার, চা ও কফি কারখানা খোলার কথা জানানো হয়েছে। গ্রিন জ়োনে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাও ছাড় পেয়েছে। সব ক্ষেত্রেই সর্বাধিক ৫০ শতাংশ কর্মী এক সঙ্গে কাজে যোগ দিতে পারবেন। ছাড়ের আওতায় এসেছে ই-কমার্স সংস্থাগুলি। এ দফায় কম নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর পরিবহণে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র। খোলা রাখা যাবে বড় রাস্তার উপরে থাকা ধাবাগুলিও।

তবে ৩ মে পর্যন্ত বন্ধই থাকবে বিমান ও ট্রেন চলাচল। চলবে না বাস, মেট্রো, ট্যাক্সি বা অটো। বন্ধ থাকছে সিনেমা হল-সহ সমস্ত বিনোদন কেন্দ্র। বন্ধ রাখা হবে সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সমস্ত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জমায়েতও বন্ধ থাকবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement