প্রতীকী ছবি।
চিনের জলসীমা ঘেঁষে হাতে গোণা যে কয়েক বার যৌথ নৌ-মহড়া করেছে ভারত, জাপান ও আমেরিকা, তাৎক্ষণিক তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেজিং। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আজ নয়াদিল্লিতে যখন এই ত্রয়ী জোট আমলা পর্যায়ের বৈঠক সারল, তখনও সে দিকে শ্যেন নজর রেখেছে চিন। তবে এ নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি তারা।
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘তিন দেশের কর্তারা নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা, যোগাযোগ, সন্ত্রাস-বিরোধিতার দিশা, সমুদ্র নিরাপত্তা এবং সমুদ্র অর্থনীতিতে সমন্বয় জোরদার করার লক্ষ্যে আলোচনা করেছেন। প্রত্যেকটি দেশই জানিয়েছে, অংশিদারিত্বের মাধ্যমে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খোলামেলা, উদার এবং সমৃদ্ধ একটি ব্যবস্থার জন্য লড়াই চলবে।’’
সমুদ্রপথে চিনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে এই ত্রিদেশীয় জোট যে আরও সক্রিয় হতে চাইছে, তা-ও আজ স্পষ্ট করা হয়েছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের বিস্তার গোটা বিশ্বের কাছেই এখন কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে অতলান্তিক মহাসাগরের গুরুত্ব অনেকটাই কমেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে শক্তির ভারসাম্য ধীরে ধীরে সরে এসেছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। যার প্রায় মাঝখানে অবস্থিত দক্ষিণ চিন সাগরকে ঘিরে ক্ষমতার লড়াই তীব্র হয়েছে বড় শক্তিগুলির মধ্যে। কিন্তু চিনের দাবি, দক্ষিণ চিন সাগর আন্তর্জাতিক জলভাগ নয়। ওই সমুদ্রের ৯০ শতাংশই চিনের নিজস্ব জলসীমা বলে বেজিং-এর দাবি। আমেরিকা এবং অন্যান্য পশ্চিম দেশ এই তত্ত্বের ঘোর বিরোধী। দক্ষিণ চিন সাগরের চারপাশে অবস্থিত ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, ফিলিপিন্স, তাইওয়ানও এই তত্ত্বের বিরোধী।
অন্য দিকে, চিনের আর এক মাথাব্যথার কারণ জাপান। জলসীমা এবং কয়েকটি দ্বীপের দখল নিয়ে জাপানের সঙ্গে চিনের সংঘাত রয়েছে। দক্ষিণ চিন সাগরের বেজিংয়ের দাদাগিরি মানতে নারাজ জাপানও।
এই পরিস্থিতিতে ভারত এবং জাপান— এই দুই শক্তিকেই কাছে টেনেছে আমেরিকা। দুই দেশের সঙ্গেই আমেরিকার সামরিক চুক্তি হয়েছে। এই ঘনিষ্ঠতা চিনের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। এই টানাপড়েনের মধ্যেই চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক ‘ডিফেন্স এক্সপো’। সেই প্রদর্শনীতে যুদ্ধাস্ত্র এবং সাজসরঞ্জাম নিয়ে হাজির থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বেজিংকে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তাতে সাড়া দেয়নি চিন।