ছবি: সংগৃহীত।
মুখে শান্তির পায়রা ওড়ানো হলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত এবং চিনের মধ্যে সংঘাতময় পরিস্থিতি খুব দ্রুত কমবে না বলেই মনে করছে সাউথ ব্লক। দিল্লি ধরে নিয়েছে, মোটামুটি পুরো গ্রীষ্মকাল জুড়েই চিন সীমান্তে সতর্কতা এবং সেনা সমাবেশ বহাল রাখতে হবে।
সূত্রের খবর, লাদাখের গালওয়ান উপত্যকার তিনটি এবং প্যাংগং লেকের একটি সীমান্ত বিন্দুতে দুই সেনা মুখোমুখি রয়েছে। নয়াদিল্লির দাবি, এই বিন্দুগুলিতে ভারতীয় সেনাদের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ, অস্ত্র, খাদ্য সরবরাহ করার পথ কম দীর্ঘ। তুলনামূলক ভাবে চিনের দিকে মূল ভূখণ্ড থেকে সীমান্তে সরবরাহের পথ অনেকটাই দীর্ঘ। শুধু মাত্র পণ্য বা অস্ত্র নয়, ওখানে সেনাদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মোতায়েন করার প্রশ্নেও ভারত তুলনামূলক বেশি সুবিধা পাচ্ছে বলে দাবি দিল্লির।
সূত্রের খবর, ভারত এবং চিন সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে নিজেদের মধ্যে নিরন্তর যোগাযোগ রাখছে। গত কালই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিঝাং আবার বলেছেন যে, সীমান্ত পরিস্থিতি সার্বিক ভাবে স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ রয়েছে। সামরিক এবং কূটনৈতিক চ্যানেল খোলা রয়েছে। দু’পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসন করতে পারবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, ‘‘আমি ভারতীয় সেনার কাছ থেকে জানতে পেরেছি, আগামী ৬ জুন দু’দেশের সেনাবাহিনীর উচ্চস্তরের কর্তারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসতে পারেন।’’
আরও পড়ুন: ১৩৮ বছর পর ঢুকছে ‘নিসর্গ’! সাইক্লোন কেন বিরল মুম্বইয়ে
আরও পড়ুন: ‘ভারত সীমান্তে চিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে’, সমালোচনা আমেরিকার
চিন সরকারি ভাবে এ সব বললেও এতে নিশ্চিন্ত হওয়ার কোনও কারণ দেখছে না নয়াদিল্লি। প্রচারমাধ্যম-সহ বিভিন্ন সূত্রকে কাজে লাগিয়ে চাপ বহাল রাখছে শি চিনফিং সরকার, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তিন দিন আগেই একটি ভিডিয়ো চিনের তরফ থেকে বাজারে ছাড়া হয়েছিল যেখানে দেখা যাচ্ছে, চিনা সামরিক বাহিনীর হাতে নাজেহাল হচ্ছে ভারতীয় সেনা। যদিও পরে ভারতীয় সেনার একটি সূত্রে বলা হয়, সেটি ভুয়ো ভিডিয়ো।
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ক্রমাগত কথা বলার যে মেকানিজম চালু রয়েছে, তার মাধ্যমে বর্তমানের উত্তেজনা হয়তো কিছুটা কমবে। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার যে এলাকাগুলিতে চিন শর্তভঙ্গ করে গত কয়েক বছর ধরে জমি জবরদখল করে রেখেছে, তা ছেড়ে দিতে কি তারা রাজি হবে? সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রেও চিন পিছিয়ে যেতে রাজি, কিন্তু বিনিময়ে ভারতকে ওই অঞ্চলে পরিকাঠামো নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। কূটনীতিকদের মতে, ২০১৭-য় ডোকলামে চিন তার রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ রেখেছিল ঠিকই, কিন্তু বিতর্কিত ভূখণ্ডে নিজেদের অবস্থান ক্রমশ পোক্ত করেছে।