ফাইল চিত্র।
এক দিকে রাজধানীর সীমানায় যুদ্ধকালীন প্রহরা কৃষক আন্দোলন রুখতে। অন্য দিকে বিদেশে ভারতীয় দূতাবাসগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আপৎকালীন দৌত্য চালাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক।
খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ ভারতীয় দূতাবাসগুলিকে নিশানা করছে বলে খবর। এর উপর আগামী ১৩ এবং ১৪ তারিখ ব্রিটেন, কানাডা, ইটালির মতো দেশগুলিতে শিখ উগ্রপন্থী সংগঠনগুলি ভারতীয় দূতাবাসগুলির সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেছে। কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সেই বিক্ষোভ যাতে মাত্রা না-ছাড়ায়, তা নিশ্চিত করতে দেশগুলির সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বিদেশ মন্ত্রক। এর আগে কানাডার পক্ষ থেকে কিছুটা ঢিলেমি দেখা গেলেও, গত ২৬ জানুয়ারি লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসটি ব্রিটিশ প্রশাসন কড়া হাতে সুরক্ষিত রেখেছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রায় এক ডজন খলিস্তানপন্থী সংগঠন সংযুক্ত রয়েছে কানাডার পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশন (পিএফজে)-এর সঙ্গে। তারা আপাতত ভারতীয় গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছে। পাশাপাশি বিতর্কিত ‘টুলকিট’ তৈরির পিছনে যার বা যাদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ, দু’দিন আগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিল দিল্লি পুলিশ। তাতে উঠে এসেছে এম ও ধালিওয়াল নামে কানাডাবাসী এক শিখের নাম। দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ব্রাঞ্চ) প্রবীণ রঞ্জন বলেছেন, ‘‘অভিযোগপত্রে কোনও ব্যক্তির নাম করা হয়নি। তবে ওই ‘টুলকিট’ তৈরির পিছনে যে খলিস্তানি আন্দোলনের সমর্থনকারী ‘পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশন’ রয়েছে, তা প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।”
সুইডেনের পরিবেশপ্রেমী তরুণী গ্রেটা থুনবার্গের নাম না-করে ‘টুলকিট’ প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ এক টুইটে বলেছেন, “এটা অনেক কিছু প্রকাশ করে দিয়েছে। আর কী সামনে আসে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিছু তারকা এমন কিছু বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, যে বিষয়ে স্পষ্টতই তাঁরা বিশেষ কিছু জানেন না। তাই বিদেশ মন্ত্রকের এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর যথেষ্ট কারণ রয়েছে।”
তবে অন্য দেশের মাটিতে এই যুদ্ধপ্রস্তুতি দেখে সমালোচনা করছে বিরোধী শিবির। তাদের বক্তব্য, কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে আমেরিকায় গণআন্দোলন যখন উত্তাল
হয়েছিল, তখন বিষয়টি নিয়ে মাথা গলানো হয়নি। বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংক্রান্ত ক্ষোভ এবং আন্দোলন চলতেই থাকে। তাদের সেই আবেগে হস্তক্ষেপ করা একটি বাইরের দেশের পক্ষে কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। সরকারের পাল্টা যুক্তি, বাইরের কোনও দেশে কী হচ্ছে, সেটা সাউথ ব্লকের ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু ভারতীয় দূতাবাসের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে, তার মোকাবিলা করার দায়িত্ব অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকারের উপর বর্তায়।