ছবি: পিটিআই।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষে সেনাদের মৃত্যুর খবর আসার পরেই সামরিক-অসামরিক স্তরে দ্রুত সরব হয়েছে চিন। লাগাতার খবর সম্প্রচার করতে শুরু করেছে চিনা সরকারি সংবাদমাধ্যম, চিনা বিদেশ মন্ত্রক মুখ খুলেছে, বিবৃতি দিয়েই চলেছেন চিনা সেনার ওয়েস্টার্ন কম্যান্ডের মুখপাত্র। অথচ ভারতীয় সেনার প্রাথমিক বিবৃতি বাদ দিলে এ দেশের সরকার তথা রাজনৈতিক নেতৃত্ব দীর্ঘ ক্ষণ ছিলেন নীরব। চটজলদি খবর জানার টক্করে ভারত যে হেরে যাচ্ছে, এই ঘটনা তার লক্ষণ বলে মনে করেন দেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান বেদপ্রকাশ মালিক।
একটি চ্যানেলকে আজ তিনি বলেন, সেনা নিজের জায়গায় মোতায়েন রয়েছে। কিন্তু তাদের ভূমিকা সীমিত। তাই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘাত নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে সক্রিয় হওয়ার সময় এসেছে। মালিকের মতে, এখন পরিকাঠামোর যা উন্নতি হয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে শুরু করে বিদেশ মন্ত্রকে সরাসরি খবর পৌঁছনো সম্ভব। তাই প্রতিক্রিয়া জানাতে বিলম্ব হলে তা ভাল নয়।
প্রাক্তন সেনাপ্রধান সাফ বলেছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে চিন। তারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতকে রাস্তা তৈরি করতে দিচ্ছে না। আলোচনা চলছে বলেই উত্তেজনা কমার আশা ছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সেনাবাহিনী স্তরে আলোচনায় জটিলতা মেটা সম্ভব নয়। বরং এই পর্যায়ে আলোচনার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। সেনা স্তরে আলোচনা হলে তা সমস্ত নিয়ম মেনে হোক, সাদা পতাকা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা সহ। সেনার কাজ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে রক্ষা করা। তাদের পক্ষে কোনও কিছু বদলানো সম্ভব নয়। তাই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরে সক্রিয় হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: লকডাউন সফল, বৈঠকে দাবি মোদীর
আরও পড়ুন: উপেক্ষা নীতিতেই কি শান্ত ডোকলাম
এই প্রসঙ্গে ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বরে নাথু লা-তে ভারতীয় ও চিনা সেনার সংঘাতের কথা মনে করিয়েছেন মালিক। সেই সময়ে তিনি ছিলেন মেজর পদে। সে বার হাতাহাতি গড়িয়েছিল গোলাগুলিতে। এখনও চিনা সেনার ওয়েস্টার্ন কম্যান্ডের মুখপাত্র বলছেন, গালওয়ান উপত্যকার ওই গোটা এলাকাই তাঁদের। মালিকের মতে, এই ধরনের বিবৃতিতে পরিস্থিতির অবনতিই হবে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে দুই দেশই এবং তা থাকবেও। বিষয়টি রাজনীতিকদের বিচার্য যে, তাঁরা এই জটিলতাকে স্থানীয় স্তরেই সীমাবদ্ধ রাখবেন, নাকি বাড়িয়ে তুলবেন।