India

চিন নিয়ে চুপ থাকার কৌশল নিয়েছে ভারত

চিনকে পশ্চাদপসরণে বাধ্য করানোর জন্য ভারতকেও যে ভাবে নিজেদের ভূখণ্ডে টহলদারির অধিকারের ক্ষেত্রে সমঝোতা করতে হয়েছে, তার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা সাউথ ব্লক আজও দিতে পারেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৫:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

লাদাখে প্যাংগং হৃদের কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া অঞ্চলে, ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে চিনা সেনা পিছিয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু বেজিংকে নিয়ে সার্বিক চাপ এবং অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে নয়াদিল্লির। কূটনীতি-বিশেষজ্ঞদের মতে, গেলাও যাচ্ছে না, উগরে দেওয়াও যাচ্ছে না— এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চিনকে নিয়ে। কণ্টকশূন্য হওয়ার রাস্তা না-পেয়ে সরকার এখন নীরবতা বজায় রাখার কৌশল নিয়েছে।

Advertisement

প্রথমত, চিনকে পশ্চাদপসরণে বাধ্য করানোর জন্য ভারতকেও যে ভাবে নিজেদের ভূখণ্ডে টহলদারির অধিকারের ক্ষেত্রে সমঝোতা করতে হয়েছে, তার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা সাউথ ব্লক আজও দিতে পারেনি। বারবার এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। দ্বিতীয়ত, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতীয় সেনারা প্রাণ হারানোর পরেও বছর শেষে দেখা গিয়েছে বাণিজ্যে চিনের উপর নির্ভরতা কমেনি নয়াদিল্লির। বরং বেড়েছে। বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতিও। সর্বশেষ অস্বস্তি বেড়েছে চিনের সাইবার হানার কথা প্রকাশ্যে চলে আসায়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সাইবার হানা নিয়ে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে আঙুল তোলার বদলে ভারত বিষয়টিকে গোপন করার চেষ্টা করছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর টুইট, “ভারতকে হুঁশিয়ারি দিতে চিন তার চিরাচরিত এবং সাইবার বাহিনীকে কাজে লাগাচ্ছে। ভারত সরকারের হাত-পা বাঁধা। আমার কথা মিলিয়ে নেবেন, দেবসাং-এ আমাদের জমি চলে গিয়েছে। ভারত সরকারের ভীরুতা ভবিষ্যতকে আরও অন্ধকার করে দেবে।” রণকৌশল-বিশেষজ্ঞ ব্রহ্ম চেলানি প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন মোদী সরকার বারবার চিনকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে? প্রথমে তারা বলেছিল, কোনও চিনা অনুপ্রবেশ হয়নি। এখন বলছে চিন সাইবার হানা হয়নি। যে শত্রুরাষ্ট্র ভারতকে বিভিন্ন স্তরে আক্রমণ করছে, কেন তাকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে?” ঘটনা হল, গত কালই কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ জানিয়েছেন, গত বছর মহারাষ্ট্রে বিদ্যুৎ সঙ্কটের জন্য চিনা সাইবার হানা দায়ী নয়। তাঁর এই মন্তব্যে বিতর্ক বেড়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, চিনের শক্তির কাছে পরাভূত বলেই কি মোদী সরকার চুপ করে রয়েছে?

Advertisement

মহারাষ্ট্রের পর চিনা হ্যাকারদের হানার খবর এ বার প্রকাশ্যে এসেছে তেলঙ্গানার সরকারি বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে। মুম্বইয়ে বিপর্যয় রোখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে অবশ্য সরকারি তৎপরতায় এড়ানো গিয়েছে বিদ্যুৎ বিপর্যয়। অভিযোগ, সম্প্রতি তেলঙ্গানার বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে হানা দেয় চিনা হ্যাকাররা। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রযুক্তিতে ভাইরাস (ম্যালওয়্যার) ঢুকে পড়েছে বলে সোমবার রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’। সঙ্গে সঙ্গে হ্যাকারদের আইপি অ্যাড্রেস আটকে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ পরিষেবা দফতরের ডিজিটাল লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড পাল্টে দেওয়া হয় তড়িঘড়ি। অত্যন্ত দ্রুত এ সব করার ফলে বিভ্রাট এড়ানো সম্ভব হয়। সম্প্রতি সামনে এসেছে, গত বছর অক্টোবরে মুম্বইয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পিছনে চিনা সংস্থা ‘রেডইকো’-র হাত ছিল। তেলঙ্গানায় তারাই হানা দিয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি এখনও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement