প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় ও চিনা সেনা। ফাইলচিত্র।
চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার জেরে নতুন করে টানাপড়েনের মধ্যেই লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) উত্তেজনা কমাতে কোর কমান্ডার স্তরের তৃতীয় বৈঠক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব লাদাখের চুসুল সীমান্ত লাগোয়া চিন-নিয়ন্ত্রিত মলডোতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে রয়েছেন লেহ্তে মোতায়েন ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ এবং চিনের দক্ষিণ শিনজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিন।
এর আগে ২২ জুন এই দুই সেনাকর্তা প্রায় ১১ ঘণ্টা বৈঠক করেছিলেন। গালওয়ান উপত্যকায় ১৫ জুনের সংঘর্ষের পরে এলএসি’তে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে সেই বৈঠকে ভারতের তরফে কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, মুখোমুখি অবস্থান থেকে দু’তরফের সেনা পিছনো, এলএসি বরাবর সেনার সংখ্যা কমানো এবং যাবতীয় নির্মাণের কাজ ও শিবির স্থাপন বন্ধ রাখার প্রস্তাব ছিল সেই তালিকায়।
বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার উপগ্রহ চিত্র বলছে, ২২ জুন এবং তাঁর পরে গালওয়ানের সংঘর্ষস্থল-সহ পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় পিপলস লিবারেশন আর্মির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। সেই চলছে বাঙ্কার ও শিবির তৈরি এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহন মোতায়েনের কাজ। বস্তুত, ৬ জুন মলডোতে কোর কমান্ডার স্তরের প্রথম বৈঠকে এলএসি’তে ‘চোখে-চোখ’ অবস্থান থেকে সরে আসার বিষয়ে ঐকমত্য হলেও চিন সেনা তা মানেনি বলে অভিযোগ। আর তারই পরিণতি গালওয়ানের পিপি-১৪-তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক সেজে ঘুরছে চিনা স্পাই! কড়া নজরদারিতে রয়েছি আমরাও
সরকারি সূত্রের খবর, গালওয়ানের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে লাদাখ অঞ্চলে গোগরা হট স্প্রিং, প্যাংগং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার এরিয়া ৪ থেকে ৮ পর্যন্ত ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে ‘অবস্থান’ মজবুত করেছে চিন সেনা। দৌলত বেগ ওল্ডি বায়ুসেনা ঘাঁটির দক্ষিণে দেপসাং উপত্যকায় এলএসি পেরিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঢুকে এসে লাল ফৌজ ‘ওয়াই-জংশনে’ ডেরা বেঁধেছে। ফলে ভারতীয় বাহিনীর পেট্রোলিং পয়েণ্ট ১০ এবং ১৩তে যাওয়া বন্ধ। গালওয়ানে ১৯৬০ সালে চিন-নির্ধারিত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান থেকেও ৪২৩ মিটার অন্দরে ঢুকে এসেছে লালফৌজ।
আরও পড়ুন: গালওয়ানে ভারতীয় ভূখণ্ডের ৪২৩ মিটার অন্দরে চিনা শিবির, দাবি উপগ্রহ চিত্রে