লেহ্তে রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই।
প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালীই হোক না কেন, ভারতের এক ইঞ্চি জমিও কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। লাদাখ সীমান্তে চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাত নিয়ে এ বার এমনই বার্তা দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। দু’দিনের লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীর সফরে গিয়েছেন তিনি। শুক্রবার সফরের প্রথম দিনে লেহ্ পৌঁছন তিনি। সেখানে ভারতীয় জওয়ানদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময়, এ ভাবেই চিনকে কড়া বার্তা দেন।
এ দিন রাজনাথ বলেন, ‘‘আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত বিরোধ মেটানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু তা কতটা মেটানো যাবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। তবে একটা কথা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, পৃথিবীর কোনও শক্তিশালী দেশ আমাদের এক ইঞ্চি জমিও কেড়ে নিতে পারবে না। তবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে, তার চেয়ে ভাল কিছু হয় না।’’
গত মাসে চিনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গালওয়ানে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারান। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে রাজনাথ বলেন, ‘‘সম্প্রতি পিপি ১৪-এ ভারতীয় জওয়ান ও চিনাবাহিনীর মধ্যে যা ঘটেছে, তাতে সীমান্ত রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আমাদের বেশ কিছু জওয়ান। আজ এখানে এসে ভাল লাগলেও, তাঁদের মৃত্যুতে শোকাহত আমি। ওঁদের শ্রদ্ধা জানাই।’’
আরও পড়ুন: দুই দেশের প্রতি ‘ভালবাসা’র তাগিদে ফের ভারত-চিনের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের
সেনা কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক শেষ হলেও, সেনা সরানোর প্রশ্নে সবক’টি জায়গা নিয়ে এখনও একমত হতে পারেনি ভারত ও চিন। সেই পরিস্থিতিতেই শুক্রবার লাদাখ পৌঁছলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেখানে সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখেন তিনি। সীমান্তবর্তী প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন সেনাবাহিনীর স্তাকনা এবং লুকুং পোস্টেও যাওয়ার কথা তাঁর।
প্যাংগং হ্রদের উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত এই লুকুং পোস্ট। ফিঙ্গার-৪ থেকে সড়ক পথে এর দূরত্ব ৪৩ কিলোমিটার। এই ফিঙ্গার-৪ এলাকা থেকেই এই মুহূর্তে সেনা সরানোর সারছে ভারত ও চিন। লুকুংয়ে ভারতীয় সেনা ও ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি) যৌথ ভাবে মোতায়েন রয়েছে।
এ দিন রাজনাথ সিংহের সঙ্গে লেহ্ পৌঁছন সেনাপ্রধান এমএম নরবণে এবং সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল বিপিন রওয়াতও। সেখানে সেনাবাহিনীর মহড়ায় অংশ নেন তাঁরা। লাদাখ সফর সেরে জম্মু-কাশ্মীরের উদ্দেশে রওনা দেবেন সকলে। সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে দেখবেন।
আরও পড়ুন: পুরনো কথা মনে রাখা হবে না, ফিরে আসুন, দলের হয়ে সচিনকে বার্তা চিদম্বরমের
এর আগে, গত ৩ জুলাই সকালে আচমকাই লাদাখে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সীমান্তে ভারত যে নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও সরবে না, সেনাবাহিনীর উদ্দেশে ভাষণে তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। ওই দিনই লাদাখ যাওয়ার কথা ছিল রাজনাথ সিংহের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গিয়ে পৌঁছনোয় সেইসময় সফর স্থগিত রাখতে হয় তাঁকে।