৯ ডিসেম্বর ভারত-চিন জওয়ানদের সংঘর্ষের বিষয়ে নীরবতা ভাঙলেন ইস্টার্ন সেনা কমান্ডার। ছবি: পিটিআই ।
অরুণাচলপ্রদেশের কোনও এলাকা চিনের দখলে নেই। তাওয়াংয়ে সাম্প্রতিক চিন-ভারত জওয়ানদের সংঘাতের আবহে শুক্রবার এমনটাই জানালেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রানাপ্রতাপ কলিতা। তিনি জোর দিয়ে জানিয়েছেন যে, এই সংঘর্ষের সময় ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনও চিনা অনুপ্রবেশ ঘটেনি। আর তাই ওই এলাকার সীমান্তবর্তী এলাকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল এবং দৃঢ়ভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জেনারেল কলিতা দাবি করেছেন।
জেনারেল কলিতা বলেন, ‘‘এমন আটটি বিতর্কিত জায়গা রয়েছে, যা উভয় পক্ষই নিজেদের বলে দাবি করে। আর সেই কারণে দু’দেশের তরফে ওই এলাকাগুলিতে আলাদা আলাদা করে তার দেওয়া রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে একটি জায়গাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) লঙ্ঘনের চেষ্টা করেছিল চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। কিন্তু আমাদের জওয়ানরা দৃঢ় ভাবে চিনা জওয়ানদের অনুপ্রবেশ আটকায়। যার ফলে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। দু’দেশের জওয়ানই আহত হয়েছেন। স্থানীয় সেনাকর্তারা আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হন।''
১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জয় এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ গঠনের স্মরণে উদযাপন করা ‘বিজয় দিবস’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে জেনারেল কলিতা এই কথা বলেন।
এই প্রথম ৯ ডিসেম্বর ভারত-চিন জওয়ানদের সংঘর্ষের বিষয়ে নীরবতা ভাঙলেন ইস্টার্ন সেনা কমান্ডার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এর আগে সংসদ অধিবেশনে জানিয়েছিলেন, চিনা সেনারা অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ের এলএসি পেরিয়ে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য ভারতীয় জওয়ানরা পিএলএ-র সেই ছক ভেস্তে দেয়। রাজনাথ এ-ও স্পষ্ট করেছিলেন যে, চিনের সেনার উস্কানিতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারত। তিনি চিনকে একপ্রকার হুমকি দিয়ে ভবিষ্যতে আরও সাবধান হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ৯ ডিসেম্বর গভীর রাতে অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় ও চিনা সৈন্যদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ, শুক্রবার গভীর রাতে হঠাৎ করে পেরেক লাগানো লাঠি হাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন প্রায় ৩০০ চিনা সেনা। পিটিআই জানিয়েছে, চিনা সেনারা ১৭ হাজার ফুট উচ্চ একটি চূড়ার শীর্ষে ওঠার চেষ্টা করে। একটি ভারতীয় সেনা পোস্টও উপড়ে ফেলার চেষ্টা করেন পিএলএর জওয়ানরা। কিন্তু ভারতীয় সেনারা তাঁদের বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেনাসূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের দাবি, হাতাহাতি এবং লাঠি-পাথর নিয়ে সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার ৬ জন জওয়ান আহত হন।