ছবি রয়টার্স।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এবং গালওয়ান উপত্যকা থেকে সেনা সরিয়ে চিন ঐকান্তিক ভাবে সহযোগিতা করবে— এমনটাই আশা করে ভারত। এই সপ্তাহেই ভারত চিন সীমান্ত মেকানিজম ডব্লিউএমসিসি-র বৈঠক বসছে। সেখানে এই বার্তাই বেজিংকে দিতে চলেছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।
অন্য দিকে চিন সংক্রান্ত আজ তাঁর তৃতীয় ভিডিয়োটি প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তাঁর আক্রমণের মুখ আপাত ভাবে চিনের দিকে ঘোরানো থাকলেও, প্রকারান্তরে আগের দুটি ভিডিয়োর মতোই আসল লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রাহুলের কথায়, চিনকে মোকাবিলার জন্য কোনও সুস্পষ্ট নীতি-দর্শন নেই মোদী সরকারের। আর সে কারণেই চিনের সঙ্গে লড়াইয়ে ভারত ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। রাহুলের বক্তব্য, তিনি নিজে বিরোধী নেতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপ দিচ্ছেন, প্রশ্ন করছেন যাতে প্রধানমন্ত্রী নড়েচড়ে বসেন। কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, সেই দায়িত্ববোধ দেখা যাচ্ছে না প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে।
দফায় দফায় সামরিক এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার পর লাদাখের গালওয়ানে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ভারতীয় কর্তারা স্বীকার করছেন এখনও বহু পথ বাকি। বিষয়টি নিয়ে আজ সরব হয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তাঁর কথায়, দু’দেশের বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছিল, চিন সম্পূর্ণ সেনা অপসারণ করবে। সীমান্তে শান্তি ও সুস্থিতি ফেরানোর উপর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নির্ভর করছে। তাঁর কথায়, “গত ২৬ জুন আমার বিবৃতিতে বলেছিলাম চিনা সেনার পদক্ষেপ, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় বিপুল সেনা সমাবেশ এবং তাদের অন্যায্য দাবি আদৌ টেকসই নয়। আমাদের পারস্পরিক চুক্তিকেও পুরোপুরি ভাবে অমান্য করা হচ্ছে এর ফলে। এলএসি-র স্থিতাবস্থা একতরফ ভাবে পরিবর্তন করার চেষ্টা আমরা বরদাস্ত করব না।”
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ ভিডিয়ো বার্তায় রাহুল বলেছেন, “অবশ্যই সীমান্তে সমস্যা তৈরি হয়েছে এবং তার সমাধান করা জরুরি। কিন্তু আমাদের চিন্তাভাবনার ধরনটাই বদলাতে হবে। আমরা দীর্ঘমেয়াদি ভাবতে পারছি না। বড় কিছু ভাবতে পারছি না। আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্যকেই নষ্ট করে দিচ্ছি। রাজনীতির দিকে তাকিয়ে দেখুন। ভারতীয়রাই ভারতীয়দের সঙ্গে লড়াই করছে। জানি যে প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতিপক্ষ। আমার কর্তব্য তাঁকে প্রশ্ন করা। তাঁর উপর চাপ তৈরি করা, যাতে তিনি কাজ করেন। তাঁর কর্তব্য হল, অভিমুখ দেখানো। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। আর সে কারণেই আজ চিন ঘাড়ের কাছে হাজির।”