সেনার হাতে এ বার আর্থিক ক্ষমতাও দিল কেন্দ্র।
গলওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের জেরে এ বার সেনার হাতে দেওয়া হল অস্ত্র কেনার আর্থিক ক্ষমতাও। তিন বাহিনীই প্রয়োজনে ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত যুদ্ধাস্ত্র কিনতে পারবে। কেন্দ্রের পদস্থ আধিকারিকদের সূত্র উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে যাতে জরুরি ভিত্তিতে সামরিক অস্ত্রসামগ্রীর ঘাটতি মেটানো যায়, তার জন্যই সেনাকে এই বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হল বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক শিবির।
গত ১৫ জুন গলওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সন্ধ্যার পর থেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে ভারত-চিন সেনার মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। তাতে মৃত্যু হয় ভারতীয় বাহিনীর এক কর্নেল এবং ১৯ সেনা জওয়ানের। তার পর থেকেই দু’দেশের মধ্যে উত্তপ্ত বাতাবরণ। চিনা বাহিনীর গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখার পাশাপাশি আগ্রাসনের চেষ্টা হলে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার কথা তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এমনকী, চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রতিরক্ষামন্ত্রক সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে বলে খবর।
তার সঙ্গে এ বার সেনার অস্ত্রভাণ্ডার বাড়ানোর ক্ষেত্রে আরও স্বাধীনতা দেওয়া হল। যুদ্ধাস্ত্র-সহ সামরিক সরঞ্জাম কেনার বিষয়টি এত দিন পর্যন্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রকের উপর সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল ছিল। অর্থাৎ কোনও অস্ত্রশস্ত্র বা সরঞ্জাম কেনার প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর কর্তারা তাঁদের চাহিদা প্রতিরক্ষামন্ত্রককে জানাতেন। মন্ত্রকই সেই সব কিনে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিত।
আরও পড়ুন: সীমান্তে চিনের উপর নজরদারি বাড়ল, দরকারে বলপ্রয়োগের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হল তিন বাহিনীকে
কিন্তু রবিবার সরাসরি অস্ত্র কেনার ক্ষমতাও দিয়ে দেওয়া হল তিন বাহিনীর হাতে। তবে এক একটি লপ্তে ৫০০ কোটির বেশি টাকার সামগ্রী কেনা যাবে না। কেন্দ্রের এক শীর্ষ আধিকারিক সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেছেন, ‘‘প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কিনতে তিন বাহিনীর সহ-প্রধানদের ৫০০ কোটি পর্যন্ত আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে বা খামতি থাকলে এই টাকার অঙ্কের মধ্যে তা মেটাতে পারবে সেনা।’’
আরও পড়ুন: ভারতের ১০০ বনাম চিনের ৩৫০ সেনা! গলওয়ানে সে দিন ৩ ঘণ্টা চলেছিল সংঘর্ষ
গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে আত্মঘাতী জঙ্গি হানার পর বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। তার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছিল। সেই সময়ও একই ভাবে সেনার হাতে অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। গলওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর চিনের সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। পরিস্থিতি আরও জটিল হলে যাতে সেনার তিন বাহিনীর অস্ত্রশস্ত্রের চাহিদা মেটানোর বিষয় সরকারি দীর্ঘসূত্রিতায় আটকে না থাকে, সেই জটিলতা কাটাতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।