লাদাখে সংঘর্ষের পর গালওয়ান উপত্যকায় যাওয়ার পথে বিশ্রাম নিচ্ছেন ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। ছবি: রয়টার্স
পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষে এক কর্নেল-সহ ২০ জওয়ানের মৃত্যুর খবর আগেই নিশ্চিত করেছিল ভারতীয় সেনা। তার সঙ্গে আরও চার জওয়ান গুরুতর জখম বলে সেনা সূত্রে খবর। অন্য় দিকে লাদাখের এই সংঘর্ষে চিনা বাহিনীর এক কমান্ডিং অফিসারের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় সেনার সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। যদিও বেজিংয়ের তরফে এ বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। অন্য দিকে ভারতীয় সেনা সূত্র উল্লেখ করে একাধিক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, চিনা বাহিনীর ৪৩ জন হতাহত হয়েছেন। বেজিংও তাদের দিকে হতাহতের খবর সরকারিভাবে স্বীকার করলেও হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট করেনি।
সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে গলওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষ শুরু হয়। গোলাগুলি না চললেও লাঠি, রড নিয়ে মারপিটে দু’পক্ষেই হতাহত হন অনেকে। মঙ্গলাবার প্রথমে তিন জনের মৃত্যুর কথা বলা হয় ভারতীয় সেনার তরফে। কিন্তু রাতের দিকে ভারতীয় সেনা নিশ্চিত করে জানায়, সংঘর্ষে গুরুতর জখম আরও ১৭ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। সংঘর্ষে গুরুতর জখম হওয়ার পর প্রায় জিরো ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার জেরেই তাঁদের মৃত্যু হয় বলে ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়। বুধবার তার সঙ্গে আরও চার সেনা জওয়ানের আহত হওয়ার খবর জানাল এএনআই। অর্থাৎ এই নিয়ে ভারতের দিকে হতাহতের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ২৪।
বেজিংয়ের তরফে অবশ্য গোড়া থেকেই হতাহতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা রাখা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রক স্বীকার করে যে তাদের দিকেও সেনা জওয়ানরা হতাহত হয়েছেন। কিন্তু সেই সংখ্যা ঠিক কত, তা স্পষ্ট করা হয়নি বুধবার দুপুর পর্যন্ত। তার মধ্যেই সংবাদ সংস্থা এএনআই কমান্ডিং অফিসারের মৃত্যুর খবর জানাল।
আরও পড়ুন: লাদাখে রাতের সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত, হতাহত চিনের তরফেও
গলওয়ান অঞ্চলের সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএফপি মঙ্গলবারই জানিয়েছিল, দু’পক্ষের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হলেও গুলি চলেনি। ঘুষোঘুষি, পাথর ছোড়াছুড়ি হয় দু’পক্ষের মধ্যে। পাশাপাশি চিনা জওয়ানরা কাঁটা দেওয়া লাঠি নিয়ে আক্রমণ চালায়। কয়েক ঘণ্টা ধরে সেই সংঘর্ষ চলে বলেও জানায় এএফপি। সেই সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে
আরও পড়ুন: মোদীর ‘দোলনা নীতি’ নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীর
মে মাসের গোড়া থেকেই গলওয়ান উপত্যকা অঞ্চলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা মোতায়েন শুরু করে চিন। ভারতের দিকেও একই ভাবে সেনা মোতায়েনের ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এসেছিল। দু’পক্ষের সেনা মোতায়েন থাকলেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। শুরু হয়েছিল সেনা পর্যায়ের আলোচনাও। দু’পক্ষের আলোচনায় ধাপে ধাপে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার মধ্যে এই সংঘর্ষে সেই আলোচনার প্রক্রিয়াও ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।