—ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনে ২৩৬টি আসন পাওয়ার পর বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া' আশা করছে, গত বারের তুলনায় এ বার তাদের হাতে অধিক সংখ্যক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থাকবে। আসন্ন বাজেট অধিবেশনে বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, বিজেপি-র দুই মন্ত্রী জে পি নড্ডা এবং রাজনাথ সিংহ তালিকা প্রস্তুত করছেন। তবে এখনও বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়নি।
সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে সবচেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই তারা সরকারের কাছে আবেদন-নিবেদনের রাস্তায় যাবে না বলেই দলীয় সূত্রের খবর। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট সাংসদের ৫৫ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব শাসক দল করলেও ৪৫ শতাংশ ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদ। সেই অনুপাতে মোট ২৪টি কমিটির চেয়ারম্যানের পদের ৯টি পাওয়া উচিত বিরোধীদের। কংগ্রেস চাইছে ৪টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ। গত বারে যা ছিল দুটি (একটি রাজ্যসভা থেকে, একটি লোকসভা থেকে)।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান তাদের দেওয়া হোক। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কমিটির দায়িত্ব যে কংগ্রেসের হাতে ছাড়বে না বিজেপি, সে কথা স্পষ্ট। কংগ্রেস বলছে, বাজপেয়ী সরকারের সময়ে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়, মনমোহন সিংহের সময়ে ওই পদে ছিলেন যশবন্ত সিন্হা।
তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কোন সাংসদকে কোন সংসদীয় কমিটির সদস্য করতে চাইছি, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ১৭ তারিখের মধ্যে তালিকা জমা দেওয়ার কথা। তৃণমূল নেত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী তা স্থির করে পাঠাব। দু’বছর আগে যে ভাবে আমাকে সরিয়ে খাদ্য এবং গণবণ্টন সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল লকেট চট্টোপাধ্যায়কে, তা ন্যক্কারজনক। আমাকে ওই কমিটিরই সদস্য করা হয়, যা আরও অপমানের। প্রতিবাদে এক দিনও কমিটির বৈঠকে যাইনি।’’
তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্য বিধানসভায় বিজেপিকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ না দেওয়ার বদলা নিয়েছিল দিল্লির শাসক দল। গত বার সাংসদ সংখ্যার নিরিখে সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল হওয়া সত্ত্বেও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটিও চেয়ারম্যান পদ পায়নি তৃণমূল। এক সময়ে রেল, বিমান, সড়ক, জাহাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ ছিল সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল তৃণমূলের। এর পর সব ক’টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকেই অপসারিত হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা।
এ বারে তৃণমূলের আসন সংখ্যা ৭টি বেড়েছে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, অন্তত একটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ নেওয়ার প্রস্তাব তৃণমূলকে দেবে সরকার। তবে সেই কমিটি তৃণমূলের পছন্দসই মন্ত্রকের হবে কি না, সেটাই দেখার।