অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ভারতের জার্মান দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কূটনীতিক জর্জ এনজ়ওয়েলার। জানিয়েছিলেন যে, তিনি আশা করেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ এবং ‘মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ’ কেজরীওয়ালের বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযুক্ত হবে। তবে তাঁর এই মন্তব্য ভাল ভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জার্মান রাষ্ট্রদূতের কেজরীওয়াল সংক্রান্ত মন্তব্যকে ‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ হিসাবে দেখছে।
তবে জার্মান কূটনীতিকের মন্তব্যের বিরোধিতা করাই নয়, শনিবারই তাঁকে নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের দফতরে তলব করা হয়। এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানা না গেলেও শনিবার সকালে সাউথ ব্লকে বিদেশ মন্ত্রকের দফতর থেকে বেরোতে দেখা গিয়েছে ওই কূটনীতিককে। মন্ত্রক সূত্রে খবর, তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে ভবিষ্যতে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আর্জি জানানো হয়েছে। শনিবার বেলার দিকে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, “আমরা এই ধরনের মন্তব্যকে আমাদের বিচার প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা হিসাবে দেখছি।”
এনজ়ওয়েলার ভারতের জার্মান দূতাবাসের সহকারী প্রধান। কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে তিনি বলেন, “যে কোনও অভিযুক্ত ব্যক্তির মতোই কেজরীওয়ালও স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচার পাওয়ার দাবিদার। কোনও রকম বিধিনিষেধ ছাড়াই তিনি যেন সব ধরনের আইনি সহযোগিতা পান। আইনের শাসনের মূল বিষয়ই হল অভিযুক্ত নিরপরাধ, প্রথম এই ধারণায় আসা। এই নীতি তাঁর (কেজরীওয়াল) ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।”
দিল্লির আবগারি দুর্নীতির মামলায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় আপ প্রধান কেজরীওয়ালকে। তাঁর রাতটা কাটে ইডি দফতরে। নিয়ম মোতাবেক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। শুক্রবার বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কাবেরী বাওয়েজার এজলাসে কেজরীর মামলার শুনানি ছিল। ইডির পক্ষে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু শুক্রবার আদালতে সওয়াল করেন। তিনি দাবি করেন যে, ‘আবগারি দুর্নীতির কিংপিন’ হলেন কেজরীওয়াল। কেজরীওয়ালকে সাত দিনের ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় বিশেষ অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) সংক্রান্ত আদালত। ২৮ মার্চ পর্যন্ত ইডি হেফাজতে থাকবেন তিনি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল ইডি।