মস্কোর কনসার্ট হল থেকে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।
মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হল ১৩৩। আহত অন্তত ১৪০ জন। শনিবার সকালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী এফএসবি-র প্রধান জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চার অভিযুক্তও, যাঁরা সরাসরি হামলায় জড়িত। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সে কথা প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় সারা দিন চুপ থাকার পর শনিবার রাতে পুতিন এই হামলা ‘বর্বরোচিত সন্ত্রাস’ বলে বর্ণনা করেন। ২৪ মার্চ, রবিবার দেশে জাতীয় শোক পালন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বিএনও নিউজ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে মস্কোর ক্রকাস সিটি হলে গুলি চালিয়েছেন চার জন। তাঁদের মধ্যে দুই আততায়ী এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ৬০ জনকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। আহত হয়েছেন বহু। রুশ সংবাদমাধ্যম জানায়, হামলার পর সাদা গাড়িতে চেপে পালিয়ে যান চার থেকে ছ’জন জঙ্গি। ধাওয়া করে ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে সেই গাড়িটিকে ধরে ফেলে পুলিশ। চার জঙ্গিকেও ধরা হয়। গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। গাড়ির ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর ক্রকাস সিটি হলে চলছিল রাশিয়ার রক ব্যান্ড ‘পিকনিক’-এর অনুষ্ঠান। ওই প্রেক্ষাগৃহে হাজার দর্শক এঁটে যেতে পারেন। ফৌজিদের পোশাক পরে কনসার্ট হলে ঢুকেছিলেন জঙ্গিরা। তার পর এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গ্রেনেড এবং বোমাও ছোড়া হয়। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কনসার্ট হল ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। সেখান থেকে কালো ধোঁয়া গলগল করে বার হচ্ছে। আগুন নেভাতে তিনটি হেলিকপ্টার থেকে জল ছোড়া হয়। অনেকেই বাঁচতে চেয়ারের পিছনে লুকিয়ে পড়েন। কেউ কেউ দৌড়ে বেসমেন্টে বা ছাদেও উঠে পড়েন। এই হামলার নিন্দা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, স্পেন, ইটালি। আমেরিকার দাবি, এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে আইএসের খোরাসান শাখা। আইএসের ওই শাখাও হামলার দায় স্বীকার করেছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে এই নিয়ে তারা মস্কোকে সতর্কও করেছিল। যদিও মস্কো এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। আমেরিকা স্পষ্ট জানিয়েছে, ইউক্রেনের যুদ্ধের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই। ইউক্রেনও দায় অস্বীকার করেছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা যদিও দাবি করেছে, হামলাকারীদের সঙ্গে ইউক্রেন যোগ রয়েছে। হামলার পর অভিযুক্তেরা ইউক্রেন সীমান্তের দিকে পালিয়ে যাচ্ছিল।
পুতিনের এক সহযোগী শনিবার সকালে জানিয়েছিলেন, আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি। এই হামলার পর সারা দেশে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। আগামী বেশ কয়েক দিন সমস্ত রকম অনুষ্ঠানও বাতিল করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেন্সিক দল। হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রও হাতে এসেছে পুলিশের।