ভাঙাচোরা রাস্তা, জীর্ণ ঘরবাড়ি, ভরলু খালের দুর্গন্ধ, বেপরোয়া ট্রেকার— কয়েক দিন আগে এমনই ছিল কালাপাহাড়-লাল গণেশ এলাকার ছবি।
এক দশক ধরে একটাই আশা ছিল এলাকার মানুষের— বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম তৈরি হলেই ভোল বদলাবে সব কিছুর। দরকার একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচের। তাঁদের সেই আশাপূরণ হবে মঙ্গলবার।
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার টি-২০ ম্যাচের হাত ধরে সে দিন বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ‘আনুষ্ঠানিক’ উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।
কালাপাহাড়-লুটুমা-ওদালবাক্রা-লাল গণেশ এলাকা মিশ্র ভাষাভাষীর বাস হলেও মূলত বাঙালির সংখ্যাধিক্য। ২০০৪ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামের। এলাকা তখনও জঙ্গলে ঢাকা। ২০১২ সালে পূর্বাঞ্চলের আন্তরাজ্য
মহিলা ক্রিকেটে অসম বনাম ওড়িশার খেলা দিয়ে বর্ষাপাড়ার যাত্রা শুরু। ২০১৩-১৪ সালে রঞ্জি ট্রফির চারটি খেলা হয় সেখানে। কিন্তু তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। আইপিএল বর্ষাপাড়ায় টানার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় এসিএ।
এসিএ-র সহ সভাপতি দেবজিৎ শইকিয়া জানান, ২০১৬ সালে বিসিসিআই প্রতিনিধিরা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এসে
২৪টি ত্রুটি সারাতে বলেছিলেন। ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিয়ে ও বিভিন্ন উপায়ে টাকা জোগাড় করে স্টেডিয়ামের সিঁড়ি, মাঠের রাস্তা, জায়ান্ট স্ক্রিন, ফ্লাড লাইট ঠিকঠাক করা হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিসিসিআই প্রতিনিধি জাভাগাল শ্রীনাথ স্টেডিয়াম দেখতে যান। তার পরেই টি-২০ ম্যাচের জন্য বর্ষাপাড়াকে বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু তখনও আশপাশের অবস্থা শোচনীয়।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর কোমর কষে নামে। পিচ পড়ে রাস্তায়। ভরলুর আবর্জনা সরানো হয়। খালের উপরে দু’টি সেতু তৈরি হয়। তৈরি হয় নতুন অ্যাপ্রোচ রোড।
দেবজিৎবাবু জানান, যে কাজ এখানে গত বিশ বছরেও হয়নি, একটা ম্যাচের সৌজন্য মাত্র ২০ দিনে তা করা হয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, ‘‘এই আন্তর্জাতিক ম্যাচ সফল ভাবে করাতে পারলে আশা রাখছি, আইপিএল-ও এখানে নিয়ে আসতে পারব।
তাতে এলাকার আরও উন্নতি হবে।’’